প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপহরণ-মারধর
চেয়ারম্যান প্রার্থী রুবেলকে সিংড়া আওয়ামী লীগের শোকজ
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, তার ভাই ও এক আওয়ামী লীগ নেতাকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় অপর প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস সই করা চিঠিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, সোমবার (১৫ এপ্রিল) নাটোর জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা দেওয়া, মারধর ও অপহরণের ঘটনা যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয় এবং ওই ঘটনায় করা মামলার আসামি সুমনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আপনার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, যা দলীয় আচরণবিধি পরিপন্থির শামিল। এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে দিতে বলা হলো। এসময়ের মধ্যে জবাব না দিলে লুৎফুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এরইমধ্যে দলীয়ভাবে মনোনায়ন প্রত্যাহারের জন্য তাকে বলেছি। তাকে শোকজ করাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাসহ যারা যারা অপহরণ ও মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, দলীয়ভাবে রুবেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছে। এখন ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাংগাঠনিকভাবে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগকে বলা হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান সই করা কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়েছে, লুৎফুল হাবিব রুবেলের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না, সোমবার (২২ এপ্রিল) কমিশনে হাজির হয়ে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও দেলোয়ারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ এপ্রিল বিকেলে নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। কয়েক ঘণ্টা পর তাকে বাড়ির সামনে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে যান তারা। ওই প্রার্থীকে মারধরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারদের মধ্যে সুমন আহমেদ নামের একজন ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে আদালতে বলেন, লুৎফুল হাবিব রুবেলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধর করেন তারা। তাদের সঙ্গে কে কে ছিলেন তাও স্বীকার করেন তিনি।
নাটোর থানার ওসি মিজানুর রহমান আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কারা এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন তাদের নাম বলেছেন সুমন। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি ওসি।
রেজাউল করিম রেজা/এসআর/জেআইএম