ভোট করবেন বলে বিএনপির ইফতারে আওয়ামী লীগ নেতা
ঝিনাইদহে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে সংগ্রামরত নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতাকর্মী ও স্বজনহারা পরিবারের সম্মানার্থে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরের প্রান্তিক শিশু পার্কে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শামসুজ্জামান দুদু।
এদিকে ইফতার মাহফিল শুরুর কিছুক্ষণ পর সেখানে উপস্থিত হন ঝিনাইদহ সদর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মাসুম। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, ইফতার মাহফিলের অর্থায়নেও ছিলেন তিনি। তবে বিএনপির ইফতার মাহফিলে তার উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা।
জেলা বিএনপির আয়োজনে শুক্রবার বিকেলে শহরের প্রান্তিক শিশু পার্কের ইফতার মাহফিলে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। সেখানে বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শামসুজ্জামান দুদু। এ সময় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনাসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে। তাকে মুক্তি দিতে হবে এবং যতদিন তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে না পারবে ততোদিন আমাদের এই আন্দোলন চলতে থাকবে। গণতন্ত্রের জন্য দেশে যারা শহীদ হয়েছেন, নির্যাতিত, সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, জেলখানায় আছেন তাদের মুক্তি দাবি করছি।
তিনি বলেন, সরকার ভালো অবস্থায় নেই, তারা বড়ই বিপদে আছে। শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য শুনলেই তা বুঝতে পারবেন। ক্ষমতার মসনদে বসার পরও কেমন আবোল তাবোল বলে তারা।
এদিকে বিএনপির ইফতার মাহফিলে যোগদানের বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ঠিকাদারা মিজানুর রহমান মাসুম মোবাইলে বলেন, এটা কোনো জনসভা না, শুধুই ইফতার মাহফিল। এখানে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত সবাই যায়। এটা দোষের কী। আমি সামনে উপজেলা নির্বাচনে ভোট করবো, তাই ইফতারে গেছি।
এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগ নেতাদের যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। যেখানে দুদু জনসভা ও টকশোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাজে কথা বলেন, আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বাজে কথা বলেন সেই দুদুর উপস্থিতিতে মাহফিলে মাসুম সাহেবের যাওয়া উচিৎ হয়নি।
এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে মিজানুর রহমান মাসুম বিএনপির মাহফিলে যেতে পারেন না। হয়তো তার ব্যক্তি স্বার্থের কারণে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।
অপরদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, দলীয় পরিচয়ে না, একজন সুশিল সমাজের মানুষ ও ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের ইফতার মাহফিলে এসেছিলেন মিজানুর রহমান মাসুম। তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল।
তবে ইফতার মাহফিলে তার অর্থায়নের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগ সঠিক না। বড় রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে অর্থসহযোগিতা পেয়ে থাকে। এতে কেউ অর্থায়ন করলে করতেই পারে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এফএ/এমএস