ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়ছে দর্জিদের
ঘুরছে সেলাই মেশিনের চাকা। সেই সঙ্গে ঘুরছে সংসারের চাকাও। বিশেষ করে, ঈদকে সামনে রেখে আয় বাড়াতেই দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন নীলফামারীর বিভিন্ন উপজেলার সেলাই কারিগররা।
ঈদকে সামনে রেখে ফ্যাশন-সচেতন আর রুচিশীল ব্যক্তিরা ছুটছেন দর্জি বাড়িতে। আগেভাগেই নিজেদের পছন্দসই জামা-কাপড় বানিয়ে রাখছেন তারা। এজন্য দর্জি পাড়ায় বেড়েছে ঈদ কেন্দ্রিক ব্যস্ততা। চাঁদ রাতের আগেই ক্রেতারাদের হাতে পোশাক তুলে দিতে দিন-রাত কাজ করছেন কারিগররা।
বিভিন্ন উৎসবে-পার্বণে দর্জির কাছে পছন্দের পোশাক বানানোর রীতি-রেওয়াজ বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। তাই দর্জির দোকানে ভিড় করছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সরেজমিনে শহরের কয়েকটি টেইলার্স ঘুরে দেখা যায়, একদিকে সেলাই মেশিনের খটখট আওয়াজ আরও পাশেই চলছে মাপ অনুযায়ী কাপড় কাটা। ফরমায়েশ নেয়া হচ্ছে নতুন পোশাকের। রমজানের শেষ সময়ে এসে মহাব্যস্ত হয়ে উঠেছে দর্জিবাড়ি। বিরতিহীন সেলাই মেশিনের যান্ত্রিক শব্দ বলছে, দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের। আর এ ব্যস্ততা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
রামগঞ্জ বাজারে জজম টেইলার্সের মোফার আলী জাগো নিউজকে বলেন, গতবারের মতো এবারও অর্ডার বেশি। ঈদের এই সময়টা অর্ডার বেশি আসে। রাত জেগে কাজ করতে হচ্ছে। কাজের চাপের কারণে খাওয়া ঘুমের সময় পাচ্ছি না। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত কাজ এবং জামা কাপড় ডেলিভারি করি।
পলাশবাড়ী বাজারে প্রভাত ডিজাইন সেন্টারের মালিক প্রভাত চন্দ্র রায জাগো নিউজকে বলেন, সারাবছরের চেয়ে ঈদের সময়ে কাজের চাপ বেশি থাকে। এ সময়ে আমারা একটু বাড়তি ইনকাম করি। এ সময়টা একটু চাপের মধ্যে দিয়ে যায়।
তবে অনেক টেইলার্সের মালিক বলেন, ক্রেতা খরায় ভুগছে। তাদের কাজের ব্যস্ততা বছরের অন্য দিনের মতোই। তাদের অভিযোগ, আগের মত এই পেশায় মানুষ থাকতে চায় না। কারণ সব কিছুর দাম বাড়লে ও আমাদের মজুরি বাড়েনি। আর মানুষ রেডিমেড জামা কাপড় এখন বেশি কেনে।
রামগঞ্জ বাজারে জজম টেইলার্সের মো. জজম আলী জাগো নিউজকে বলেন, মেয়েরা যেমন নিত্যনতুন বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক বানাতে আসছেন, তেমনি ঈদের সময় শার্ট-প্যান্টের চেয়ে ছেলেদের বেশি আগ্রহ পাঞ্জাবিতে। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির আঁচ লেগেছে দর্জিবাড়িতেও। যেখানে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মজুরি। আমাদের টেইলার্সে প্রতি পিস প্যান্ট সেলাই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ২৫০ টাকা, ব্লাউজ ১৫০, ব্লাউজ (ডবল) ৩০০, পেটিকোট ৮০, ম্যাক্সি ১২০ থেকে ১৩০, গাউন ৩০০ থেকে ৪০০, বোরকা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এএইচ/এএসএম