গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং
গরমের শুরুতে বগুড়ায় লোডশেডিং বেড়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন এই জেলায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবারহের ঘাটতি থাকছে।
একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে লোডশেডিং। এই দুই কারণে মানুষের দুর্ভোগ বাড়তে শুরু করেছে। রমজান মাস হওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। বিপণীবিতাণে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষের কষ্টও বেড়েছে।
শহরের নিউ মার্কেটে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা সাদিয়া আফরিন বলেন, এমনিতে প্রচণ্ড গরম। এরমধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে একঘণ্টার আগে আসছে না। রোজা রেখে পরিবারে জন্য ঈদ মার্কেট করাটাও কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।
শহরের সাতমাথা এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী জুয়েল রানা বলেন, দোকানের ফ্রিজে দামি ও গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ থাকে। এইভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে ওষুধ নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে। গরমের শুরুতে যে অবস্থা, সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) নেসকো বগুড়া সূত্রে জানা যায়, গ্রাহকসেবার সুবিধার্থে বগুড়া শহরকে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১, ২, ৩ এবং ৪ অঞ্চলে ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সংস্থাটি। শহর ছাড়াও দুপচাঁচিয়া, শেরপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে নেসকো। এই চার অঞ্চলে গড়ে মোট বিদ্যুতের চাহিদা ১০০ মেগাওয়াট। বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ মিলছে ৭০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। চাহিদার তুলনায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ সরবারহে ঘাটতি থাকায় প্রতিদিন দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে।
শহরের পাশাপাশি গ্রামে চলছে লোডশেডিং। দিন-রাতে ২৪ ঘণ্টায় গড়ে দুই থেকে তিনঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর অধীন সারিয়াকান্দি, ধুনট, গাবতলী, শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলার ৪ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক। জেলার অন্য উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ থেকে।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, বুধবার সকাল ছয়টা থেকে প্রথম তিন ঘণ্টা কোনো লোডশেডিং হয়নি। এখন গড়ে এই অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট। সরবরাহ মিলেছে ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট। ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে ১০ থেকে ১৫ মেগাওয়াট। ফলে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় দিন-রাতে ১৫ শতাংশ সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেনারেল ম্যানেজার মোনয়ারুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, সকালের দিকে আবহওয়া ভালো থাকায় লোডশেডিং থাকে না। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিং দেখা দেয়। এই অঞ্চলে বিদ্যুৎতের চাহিদা ৮৮ মেগাওয়াট। চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় দিন-রাতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
এফএ/এএসএম