মজুতের পেঁয়াজে ধরেছে পচন

লিপসন আহমেদ লিপসন আহমেদ , সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২৪

একদিকে বাজারে বেড়েছে সরবরাহ। অন্যদিকে যে কোনো সময় দেশে ঢুকবে আমদানি করা পেঁয়াজ। এ অবস্থায় কয়েকদিনের ব্যবধানে অর্ধেকে নেমেছে দাম। এরমধ্যে অধিক লাভের আশায় মজুত করা পেঁয়াজ গুদামে পচতে শুরু করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দু-তিন সপ্তাহ আগেও সুনামগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। তবে বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় এবং আমদানির খবরে বছরজুড়ে উঠতে থাকা নিত্যপণ্যটির এবার পতন হয়েছে। এর মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের মজুত করা পেঁয়াজে পচন ধরেছে। তাই রোদে শুকিয়ে পচন ঠেকানোর প্রাণপণ চেষ্টা তাদের।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। অধিক লাভের আশায় ৩০০ বস্তা পেঁয়াজ নিজ গুদামে মজুত করেন। এরমধ্যে প্রায় ৫০ বস্তা পেঁয়াজ বাড়তি দামে বিক্রিও করেন। তবে বাকি পেঁয়াজে পচন ধরেছে।

মজুতের পেঁয়াজে ধরেছে পচন

তিনি বলেন, ৭০-৭৫ টাকা কেজিপ্রতি কিনেছি। এখন বাজারে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আমাকেও বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে পচা পেঁয়াজগুলো ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

আরেক ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া বলেন, বেশি লাভের আশায় গুদামে পেঁয়াজ মজুত করেছিলাম, কিন্তু এখন বাজারে পেঁয়াজের কদর নেই। সেইসঙ্গে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা লোকশন গুনতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায় বেশি লাভ করতে গিয়ে উচিত শিক্ষা হয়েছে।

এদিকে ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম কমায় স্বস্তিতে তারা। মজুতদারি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।

মজুতের পেঁয়াজে ধরেছে পচন

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ক্রেতা স্বপন কুমার বর্মণ বলেন, যখন বাজারে পেঁয়াজের সংকট ছিল তখন যদি অসাধু ব্যবসায়ীরা কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতেন তাহলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হতো। পেঁয়াজ এখন ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হয়।

আরেক ক্রেতা হেলাল রহমান বলেন, বাজারে এখন পেঁয়াজের কদর নেই। যারা পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছিল তাদের পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। সেই পচা পেঁয়াজ ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করছে তারা।

এদিকে অবৈধ মজুত ঠেকাতে বরাবরই সচেষ্ট বলে জানান ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক আল-আমিন। তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের প্রভাব পড়েছে। যে কারণে পেঁয়াজসহ আরও অনেক পণ্যের দাম কমেছে। যদি কেউ অবৈধ মজুত করে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

মজুতের পেঁয়াজে ধরেছে পচন

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, যারা বেশি মুনাফার লোভে মজুত করেছিলেন এটা তাদের কৃতকর্মের ফল। এখন আফসোস ছাড়া কিছু করার নেই। হয়তো পরে আর মজুত করবেন না।

রমজান মাসের শুরুতে সুনামগঞ্জের বাজারগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, যা এখন কমে এসেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।