ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

এন কে বি নয়ন এন কে বি নয়ন ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৫:৫৮ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৪

পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একমাত্র জামদানি তৈরির কারখানায়। দিনরাত কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। প্রতিটি শাড়ি সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নের চাপুলিয়া গ্রামে অবস্থিত জামদানি তৈরির কারখানার মালিক মোস্তফা রহমান। তার কারখানায় রয়েছে ছয়টি তাঁত। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই কারখানাটি ধরে রেখেছেন তিনি।

ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চাপুলিয়া গ্রাম। ওই গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তফা রহমান (৩৮)। সরেজমিন দেখা গেলো, কারখানাটিতে ১২ জন কারিগর কাজ করছেন। তবে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ সামনে তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে।

কারখানা শ্রমিক কানাইপুরের ইমন মাতুব্বর জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে প্রায় দেড় বছর ধরে জামদানি তৈরির কাজ করছি। সামনে ঈদ। বেতন-বোনাস নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাবো। ঈদে যাতে বেশি শাড়ি বুনতে পারি, সেজন্য বেশি পরিশ্রম করছি।’

ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

তাঁতশ্রমিক রুপসী পারভিন বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ ও ঈদ সামনে কারখানার মালিক বেশি জামদানি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে।

জামালপুরের শেরপুরের বাসিন্দা ও জামদানি শাড়ির কারিগর আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে বেনারসি, জামদানি শাড়ির বেশ চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে তুলা, সুতা, বিদ্যুৎ, কারিগর ও যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়েছে। তাই এ পেশায় কারিগরের সংখ্যা কমার পাশাপাশি তাঁতপল্লিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

কথা হয় মোস্তফা রহমানের স্ত্রী লিপি সুলতানার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক বছর আগে আমার স্বামী বাড়িতে তাঁত বসিয়ে জামদানি বুনতে শুরু করেন। তার কাছ থেকেই কাজ শিখেছি। স্বামীর পাশাপাশি আমিও কাজ করি এবং কারখানাটি দেখাশোনা করি। তবে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও পুঁজির অভাবে কারখানাটি বড় করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

কারখানার মালিক মোস্তফা রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কারখানাটি গড়ে তুলতে খরচ হয়েছে পাঁচ লাখ টাকার মতো। এখন শ্রমিকের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ সবমিলিয়ে ২৫-৩০টি জামদানি শাড়ী বুনতে প্রতিমাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। শাড়িগুলো বিক্রি করে খরচ বাদে ৭০-৮০ হাজার টাকা আয় হয়। সরকারি-বেসরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেলে কারখানাকে আরও বড় করার কথা জানান তিনি।

ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ফরিদপুরের উপমহাব্যবস্থাপক মানছুরুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, আমার জানামতে ফরিদপুরে কোনো জামদানি পল্লি নেই বা শাড়ি তৈরি করা হয় না।

আলফাডাঙ্গায় একটি তাঁত গড়ে উঠেছে। সেখানে কয়েক বছর ধরে জামদানি শাড়ি তৈরি করা হয় জনালে তিনি বলেন, ‘ঠিকানা দিন। সরেজমিন বিস্তারিত তথ্য জেনে আপনাকে জানাতে পারবো।’

ফরিদপুরের একমাত্র জামদানি কারখানা ঈদ সামনে চাঙা

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্টরা যদি যোগাযোগ করেন তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।