টাকার অভাবে বুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত মিরাজের
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার মেধাবী ছাত্র মিরাজ বাবু। তার লেখাপড়ায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি দরিদ্রতা। সেটা আবারও প্রমাণ করলেন অদম্য এ মেধাবী। চলতি বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) ১০৪১তম হয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মিরাজ। তবে অর্থের অভাবে ভর্তিতে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বুয়েটের ভর্তির শেষ সময়।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমান ও মরিয়ম বেগম দম্পতির ছেলে মিরাজ বাবু। আতোয়ার রহমানের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা সরকারি আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনিও বাড়িতে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালান।
মিরাজ বাবুর বাবা আতোয়ার রহমান একজন বর্গাচাষি। বাড়ির ভিটেটুকু ছাড়া নিজেদের জায়গা-জমি বলতে কিছু নেই। আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমি একজন বর্গাচাষি। অন্যের জমি আবাদ করে কোনোমতে সংসার চালাই। এখন ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে। তবে তার পড়াশোনা করানোর সাধ্য আমার নেই। কেউ যদি সাহায্য করে তাহলে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারবো।’
শুধু বুয়েট নয়; চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (রুয়েট) চান্স পেয়েছেন মিরাজ বাবু।
মিরাজ বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর থেকে আমি টিউশনি করাই। সেই টিউশনির টাকা দিয়ে কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। স্কুলের শিক্ষক ও কলেজের স্যাররা আমাকে খুবই সহযোগিতা করেছেন। বিনা টাকায় প্রাইভেটও পড়িয়েছেন। এবার বুয়েটে চান্স পেয়েছি। আমার শখ আমি প্রকৌশলী হবো। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে পড়াশোনা চালানো সম্ভব নয়। আর্থিকভাবে কেউ সহযোগিতা না করলে আমার স্বপ্ন বোধহয় পূরণ হবে না।’
মিরাজের স্কুলশিক্ষক নুরুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষকদের সহযোগিতায় বিনা বেতনে পড়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছে মিরাজ। এখন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নপূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অর্থের অভাবে। বিত্তবানদের উচিত তার পাশে দাঁড়ানো।’
এ বিষয়ে বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বারি বলেন, ‘ছোট থেকে অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে মিরাজ। সে এবার বুয়েটে চান্স পেয়েছে। তার সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে এলে হয়তো তার স্বপ্ন পূরণ হবে।’
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে।
রবিউল হাসান/এসআর/এমএস