ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নানোৎসবে লাখো মানুষের ঢল
পাপ মুক্তির বাসনায় নারায়ণগঞ্জে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে শুরু হয়েছে হিন্দু পুণ্যার্থীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসব। বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ২৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে তিথি শুরু হওয়ার পর ভোর থেকে ঢল নামে নদে।
এদিকে হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’ মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা জীবন থেকে শুরু হয় স্নানোৎসব।
এদিন পহেলা বৈশাখ থাকায় দূর দূরান্ত থেকে আসা লোকজনদের ঢল ভোরেই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে বুধবার রাতেই ভিড় জমান ঘাটগুলোতে। লগ্ন শেষ হবে বৃহস্পতিবার দিনগত (ঘড়ি অনুযায়ী শুক্রবার) রাত ২টা ৪৭ মিনিট ৭ সেকেন্ডে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও পাশের দেশ ভারত, নেপাল হতেও প্রচুর সংখ্যক লোকজন এসেছে। তবে গতবার গুজবে হুড়োহুড়িতে ১০ জনের প্রাণ যাওয়ার কারণে কিছুটা আতঙ্ক থাকায় এবার লোকজন সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে ধারণা আয়োজকদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি স্থানে মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে স্নানোৎসব।
জানা গেছে, পবিত্র নদ ব্রহ্মপুত্রে স্নানমন্ত্র পাঠপূর্বক নিজ নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরতকি, ডাব, আম্র পল্লব ইত্যাদি দিয়ে পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে তর্পণ করবে ভক্তরা। মন্দিরগুলোতে ইতোমধ্যেই সাধু সন্ন্যাসীরা সমবেত হয়ে ভক্তিমূলক গান করছে।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎযাপন পরিষদের তথ্য ও যোগাযোগ উপ কমিটির আহ্বায়ক দিলীপ কুমার মন্ডল জানান, বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ থেকে সাবদি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ১৬টি ঘাটে জড়ো হয়ে তিথি হিসেব করে স্নান করবে লাখো পূণ্যার্থী। এ বছর লাঙ্গলবন্দে ১০ থেকে ১৫ লাখ পূণ্যার্থীর আগমন আশা করছেন।
তিনি আরও জানান, এবার আমাদের কাছে তেমন কোনো অভিযোগ আসে নি। তবে বৃহস্পতিবার যেহেতু পহেলা বৈশাখ সেহেতু বিকেলের পর ভিড় আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় সদস্য রনজিৎ মোদক জানান, এবার ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণ ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মা কুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, বড় দেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেম তলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী ও জগৎবন্ধু ঘাটে অবস্থান করা হচ্ছে।
এসএস/এবিএস