‘এখন কে দেখবে আমাদের’
চান মিয়া-মনোয়ারা দম্পতি। নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুরের বাসিন্দা তারা। নিজেদের বলতে কোনো ভিটেমাটি নেই। রেললাইন ঘেঁষা সরকারি জায়গাটুকুই তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। সেখানেও ঘটালো বিপত্তি। ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় ভেঙে লণ্ডভণ্ড হলো তাদের অস্থায়ী বসতঘর। এ দম্পতি ঘর হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন।
রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এতেই ভাঙে চান মিয়া-মনোয়ারা দম্পতির ঘর।
চান মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, কোথাও থাকার জায়গা নাই। নিরুপায় হয়ে রেললাইনের পাশে কোনোরকম ঘর বানিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছিলাম। সেটিও ভেঙে গেল। তবে আমরা যে প্রাণে বেঁচে আছি সেটাই বড় কথা। দুজনেই ব্যথা পেয়েছি। এখন কে দেখবে আমাদের। কোথায় হবে ঠিকানা।
আরও পড়ুন
জানা গেছে, রোববার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বিজয় এক্সপ্রেস। দুপুর পৌনে ২টায় নাঙ্গলকোটের হাসানপুরে পৌঁছালে তেজের বাজার এলাকায় বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ট্রেনটির ইঞ্জিন। পরে গতি কমে আসা ইঞ্জিনকে পেছন থেকে আবার ধাক্কা দেয় বগিগুলো। এতে একে একে ৯টি বগি যাত্রী নিয়ে পড়ে যায় রেললাইনের পাশে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, চৌদ্দগ্রামের গুণবতী স্টেশন পার হয়ে নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশনে প্রবেশের সময় আউটারে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটির ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, অতিরিক্ত গরমের কারণে লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন গিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসান চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, নিরাপদে ট্রেনের যাত্রীদের ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ চলাকালে ট্রেনটিকে নিরাপত্তা দেবে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী।
জাহিদ পাটোয়ারী/এমকেআর