মিনি সুন্দরবনের দেড় শতাধিক গাছ কেটে সাবাড়!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২৪

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মিনি সুন্দরবন খ্যাত বনাঞ্চলের দেড় শতাধিক বাইন ও কেওড়া গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। উপজেলার সোরা এলাকায় মাদার নদীর চরে প্রায় পাঁচ দশক আগে গড়ে ওঠা বনভূমি থেকে এসব গাছ কাটা হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী অংশের উপকূল রক্ষা বাঁধে মাটি দেওয়ার অজুহাতে গত চারদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিযুক্ত ঠিকাদারের লোকজন এসব গাছ কেটে সাবাড় করেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তনকৃত ১৩২টি গাছ জব্দ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাযার্দেশ পেয়ে সোরা এলাকার বাঁধের ওপর মাটি ফেলার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন অ্যান্ড কোং। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি ঝুড়ি-কোদাল ব্যবহারের পরিবর্তে এক্সেভেটর দিয়ে চরের মাটি নিয়ে বাঁধের উপর দেওয়া শুরু করে। তবে পুরোভাগজুড়ে কেওড়া ও বাইন গাছের বনভূমি থাকায় মাটি সংগ্রহের সুবিধার্থে সোমবার থেকে তারা চরের গাছ কেটে সাবাড় করে।

ঠিকাদারের ম্যানেজার আউয়াল হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী তুষার বর্মন ও অসিউল দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করাচ্ছিলেন। সামাজিক বনায়নের কোনো সাইনবোর্ড সেখানে না থাকায় ভুলবশত প্রায় একশ ছোট গাছ নষ্ট হয়েছে। তবে গাছ বিক্রির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

সোরা গ্রামের হুমায়ন কবীর জানান, এলাকাবাসীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক্সেভেটর চালক সোহেল গাছ কাটার নেৃতৃত্ব দেন। এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দারস্থ হয়েও প্রতিকার মেলেনি। বাধ্য হয়ে বুধবার রাতে তিনি বাদী হয়ে কর্মরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঠিকাদারের লোকজন কর্তনকৃত গাছ কেজি দরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

স্থানীয় রমজাননগর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক জাগো নিউজকে জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে ১৩২টি গাছ জব্দ করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার প্রিন্স রেজা জাগো নিউজকে জানান, ঠিকাদার কর্তৃক কিছু গাছ কাটার খবর তিনি জানতে পেরেছেন। আপাতত কাজ বন্ধ করা হয়েছে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কাটার ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে উপপরিদর্শক লিটনকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপকূলের এসব বনাঞ্চলই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উপকূলবাসীকে রক্ষা করে। এর আগে একই অপরাধে কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।