আদমদীঘিতে ১১ শহীদের স্বজনরা ভাতা বঞ্চিত
বগুড়ায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের রাজাকার-আলবদরদের সাথে গেরিলা এবং সম্মুখ যুদ্ধে আদমদীঘি উপজেলায় ২২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজ এলাকা, বগুড়া ও নওগাঁয় শহীদ হন।
নানা কারণে ১১ শহীদের স্বজনরা শহীদ ভাতাসহ সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত রয়েছেন। তাদের রাষ্ট্রীয় কোনো কর্মসূচিতে আমন্ত্রণও করা হয়না।
বঞ্চিতরা হলেন, সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর মহল্লার শহীদ জালাল উদ্দিন, দক্ষিণ মালশন মহল্লার শহীদ আজিজার রহমান শাহ, আদমদীঘি উপজেলা সদরের তালশন গ্রামের শহীদ পুলক কুমার বিশ্বাস, উপজেলার দত্তবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রহিম উদ্দিন, মটপুকুরিয়া গ্রামের শহীদ ইব্রাহিম আলী, অন্তাহার গ্রামের শহীদ আশরাফ উদ্দিন, একই গ্রামের শহীদ নজরুল ইসলাম, ডহরপুর গ্রামের শহীদ আব্দুস ছাত্তার, কাশিমালা গ্রামের শহীদ মোজাম্মেল হক, শিবপুর গ্রামের শহীদ শরিফ উদ্দিন এবং কাঞ্চনপুর গ্রামের শহীদ আব্দুস ছাত্তারের পরিবার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এর মধ্যে আদমদীঘি উপজেলা সদরে ৫ জন, বগুড়া সদরে ১ জন, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ১ জন ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৬ জন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সহযোগীতায় আদমদীঘি উপজেলা প্রশাসনের তৈরি করা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তাদের সকলের নাম রয়েছে। এদের একজন ময়মনসিংহ জেলার মধুপুরের। তিনি সান্তাহার শহরের পূর্ব ঢাকা রোড রেলগেট এলাকায় শহীদ হন। তার নাম সুজিত বর্মন। এছাড়া আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত এই বীর শহীদের কোনো স্বজনের খোঁজ মেলেনি। তবে স্বাধীনতার পর ওই রেলগেটের নাম শহীদ সুজিত নামকরণ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড।
আদমদীঘির এ ২২ জনের মধ্যে ৭ শহীদের প্রকৃত ওয়ারিশের নামে ভাতা চালু রয়েছে। ৪ জনের প্রকৃত ওয়ারিশ বাবা-মা মারা যাওয়ায় শহীদ ভাতাসহ সব প্রাপ্য বাতিল হয়ে গেছে।
আদমদীঘি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল হামিদ জানান, বাবা-মা মারা যাবার পর ওই ৪ শহীদের স্বজন তথা ভাই-বোন বেঁচে থাকলেও তারা প্রকৃত ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকৃত নন। এ কারণে বরাদ্দ ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। অবশিষ্ট ১১ শহীদের প্রকৃত ওয়ারিশ (বাবা-মা এবং স্ত্রী ও সন্তান) না থাকা এবং কারো কারো থাকলেও আবেদন না করায় শহীদ ভাতাসহ সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত রয়েছেন।