ঘটনাস্থলে না থেকেও আসামি হলেন দুই ভাই
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন নিয়ে মারামারির ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে না থাকলেও রাজন মিজি ও তার ভাই রিয়াদ আহম্মদকে একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। পরে দুই ভাইকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রায়পুর থানায় এমনই ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজন ও রিয়াদের ছোট ভাই মোরশেদ আলম বিষয়টি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রায়পুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর দেনায়েতপুর মিয়াজি বাড়ি ও হুতার বাড়ির সামনে লুৎফর রহমান মিয়াজিদের (৫৮) সঙ্গে হান্নান মিয়াজিদের (৫০) মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হন। মারামারিতে লুৎফর রহমানও আহত হন। খবর পেয়ে পরদিন তার বড় ছেলে রাজন কর্মস্থল মুন্সিগঞ্জ ও রিয়াদ গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে বাবাকে দেখতে বাড়িতে আসেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইলফোন নম্বরের বিস্তারিত কল তালিকা বিবরণী প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে ঘটনার বর্ণিত সময়ে তারা রায়পুরে ছিলেন না।
রাজন মুন্সিগঞ্জে কনস্ট্রাকশনের কাজ করেন। আর টঙ্গী এলাকায় এসি মেরামতের কাজ করেন রিয়াদ।
এদিকে লুৎফর রহমানকে পিটিয়ে আহতের ঘটনায় ১ মার্চ তার ছোট ছেলে মোরশেদ আলম বাদী হয়ে রায়পুর থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ ঘটনার ৩ মার্চ খুকি বেগম ও ফারজানা পারভিন কাজল নামের দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন খুকি ও কাজলসহ অপর অভিযুক্ত লিমন হোসেন, রায়হান হোসেন, রিফা আক্তার, রিফা বেগমকে আদালত জামিন দেন। মামলার আসামি হান্নান মিয়াজি, ফিরোজ মিয়াজি ও ইসমাইল মিয়াজি পলাতক।
অন্যদিকে ৬ মার্চ রায়পুর থানায় পাল্টা মামলা করেন ফিরোজ মিয়াজির স্ত্রী ফারজানা পারভিন কাজল। এ মামলায় ঘটনার পরদিন বাড়িতে আসা রাজন ও রিয়াদসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। ৭ মার্চ পুলিশ বাড়ি থেকে রাজন ও রিয়াদকে গ্রেফতার করে আদালত সোপর্দ করে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মোরশেদ আলম বলেন, ‘রাজন ও রিয়াদ বাবাকে দেখতে বাড়িতে এসেছেন। তারা ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলেন না। এরপরও তাদের মামলায় জড়ানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত না করেই আমার ভাইদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।’
মোরশেদের করা মামলার তদন্ত করছেন রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান ইরফান। তিনি বলেন, ‘মামলার তিন আসামি পলাতক। তাদের গ্রেফতারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।’
ফারজানা পারভিন কাজল বলেন, ‘মারামারির সময় আমার ছেলে রায়হান ঘটনাস্থলে ছিল না। তাকে আসামি করা হয়েছে। আমি ছাড়াতে গেছি, আমাকেও আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় রাজন ও রিয়াদসহ বহিরাগত কয়েকজন উপস্থিত ছিল।’
ফারজানার করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়পুর থানার এসআই এনামুল হক বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজন ও রিয়াদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনার দিন তারা কোথায় ছিলেন, তা আমাদের জানা নেই। ঘটনাটির তদন্তে চলছে। তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে।
কাজল কায়েস/এসআর/জেআইএম