পালকিতে বর-কনে, বরযাত্রী এলেন ঘোড়া ও গরুর গাড়িতে
পালকি চড়ে এসেছেন বর। আর পালকির পিছু পিছু ঘোড়া ও গরুর গাড়িতে বরযাত্রীরা। বিয়ের পর কনেও শ্বশুরবাড়িতে গেলেন পালকিতে চড়ে। চিরায়ত বাংলার এমন বর্ণনা এখন শুধু গল্প-উপন্যাসেই মিলবে। সেই লোকজ ঐতিহ্যের উপাখ্যানই যেন ফিরে আসে যশোরের ঝিকরগাছায়। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঝিকরগাছার শংকরপুর ও বাঁকড়া ইউনিয়নে এমনই এক বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
বর ছিলেন উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের খাটবাড়িয়া গ্রামের উসমান কবিরের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী রাসেল কবির। কনে পার্শ্ববর্তী বাঁকড়া ইউনিয়নের বাঁকড়া গ্রামের জান্নাতুল জান্নাতি। তিনি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
জানা যায়, রাসেল কবির ও জান্নাতুল জান্নাতির কিছুদিন আগে বিয়ে হলেও শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এদিন একটি পালকিতে চড়ে বর যান কনের বাড়িতে। পাশাপাশি আরেকটি খালি পালকি নেওয়া হয় কনে আনার জন্য। একটি ঘোড়ার গাড়ি আর ১৫টি গরুর গাড়িতে চড়ে বরযাত্রী যান পালকির পিছু পিছু। নেচে গেয়ে বাদ্য বাজিয়ে পুরো যাত্রাপথ অতিক্রম করে অতীত ঐতিহ্যকেই স্মরণ করেন তারা।
গ্রাম বাংলার শেকড়ের এমন আয়োজন দেখতে রাস্তার দু’ধারে মানুষের ঢল নামে। গ্রামের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসেন। সকলের চোখে মুখে ছিল উৎসবের আমেজ।
বর রাসেল কবির বলেন, দীর্ঘদিনের শখ আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য স্মরণে এমন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। দুই পরিবারের সম্মতিতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে।
বরের ভাই জাকির হোসেন বলেন, পালকিতে চড়ে বর যায়। পাশাপাশি একটি ঘোড়ার গাড়ি ও ১৫টি গরুর গাড়ি সাজানো হয় বরযাত্রীর জন্য।
বরের নানি বলেন, আমাদের সময়ে গরুর গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে যেত। এখন বুড়ো বয়সেও আমরা গরুর গাড়িতে চড়লাম।
কনের নানা হারুন মিয়া জানান, অন্তত ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে এমন বিয়ে দেখেছি। এমন আয়োজন দেখে এলাকার মানুষ খুবই আনন্দিত।
বরযাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, আধুনিকযুগে পালকি বা গরুর গাড়িতে বিয়ে হয় না। বহুকাল পরে আমরা এমন বিয়ে দেখলাম। এই বিয়েতে প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটেছে।
মিলন রহমান/এফএ/এএসএম