দাদার স্বপ্ন পূরণ
৪ মাসের শিশুপুত্র বাড়ি ফিরলো হেলিকপ্টারে
বাবার স্বপ্ন পূরণে চার মাসের শিশু সন্তানকে হেলিকপ্টারে বাড়িতে আনলেন ছেলে। কন্যাসন্তান হওয়ার ১৪ বছর পর ছেলে হওয়ার খুশিতে নানাবাড়ি থেকে নাতিকে হেলিকপ্টারে করে আনার স্বপ্ন ছিল দাদার। স্কুলশিক্ষক রাজা মিয়া বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জমদুয়ারা গ্রামের। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জমদুয়ারা তালতলা মাঠে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। অজপাড়া গাঁয়ে হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় জমান নানা বয়সী হাজারো মানুষ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, স্থানীয় অক্সফোর্ড একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক রাজা মিয়ার একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। কন্যা জন্মের ১৪ বছর পর জন্ম নিয়েছে পুত্রসন্তান। এই খুশিতে রাজা মিয়ার বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কুদরত আলী শখ করেন নাতিকে তিনি নানাবাড়ি থেকে হেলিকপ্টারে বাড়ি আনবেন। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে রাজা দিয়া লাখ টাকায় হেলিকপ্টার ভাড়া করেন। এরপর শুক্রবার দোহার-নবাবগঞ্জ এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ছেলে রেজুয়ান উৎস (৪)ও তার মাকে হেলিকপ্টারে করে শিবালয় উপজেলার জমদুয়ারায় নিজ গ্রামে নিয়ে আসেন। এসময় দাদা কুদরত আলীও সঙ্গে ছিলেন।
চার মাসের শিশু পুত্রকে বরণ করে নিতে আগে থেকেই প্রস্তত ছিলেন স্বজনরা। তালতলা মাঠে হেলিকপ্টার পৌঁছার আগেই প্রস্তত ছিল ঘোড়ার গাড়ি। গাড়িটি ফুল দিয়ে সাজানো হয়। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
শিশুটির চাচা মোহাম্মদ আলী মুরতজা পলাশ বলেন, ‘মামাতো, চাচাতো সব ভাইদের ঘরেই কন্যাসন্তান। সেখানে এই পুত্রসন্তান বংশের প্রদীপ। তাই সবাই অনেক খুশি। এই অনুভূতি আসলে ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়।’
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কুদরত আলী বলেন, ‘নাতি হওয়ার খবরে অনেক খুশি হয়েছিলাম। শখ ছিল তাকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আনবো। মহান আল্লাহ আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে। এজন্য আজ আমার আনন্দের শেষ নেই।’
শিশুর বাবা রাজা মিয়া বলেন, ১৪ বছর পর পুত্রসন্তান হওয়ায় মা-বাবা শখ করেছিলেন নাতিকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আনবেন। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমারও অনেক আনন্দ লাগছে। কারণ আমার বাবা আমার বন্ধুর মতো। বাবা-মায়ের আনন্দ মানে সবার আনন্দ।
বি এম খোরশেদ/এসআর/এএসএম