এক পোশাক কারখানায় স্বাবলম্বী তিস্তাপাড়ের নারীরা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা সাধুর বাজারে গড়ে উঠেছে একটি মিনি পোশাক কারখানা ‘তিস্তা গার্মেন্টস অ্যান্ড ফ্যাশন হাউজ’। স্থাপনের কয়েক মাসের মাথায় কারখানাটির পোশাক স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে ভারত, দুবাই ও চীনে। এই পোশাক কারখানায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তিস্তাপাড়ের নারীরা।
এখানে কাজ করছেন প্রায় ৩৫ জন নারী। নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
কারখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আব্দুল হালিমের স্বপ্ন ছিল এলাকার মানুষকে স্বাবলম্বী করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানি সাধুর বাজারে তার অন্য তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তিস্তা গার্মেন্টস অ্যান্ড ফ্যাশন হাউজ নামে ছোট্ট পোশাক কারখানাটি স্থাপন করেন। যেখানে কাজ করছেন ওই এলাকার স্থানী নারীরা। বিভিন্ন জায়গায় পোশাক সাপ্লাই দিয়ে কারখানাটি এগিয়েও যাচ্ছে। দিন দিন পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পোশাক কারখানাটির পণ্য স্থানীয় বাজারেও বিক্রি হচ্ছে।
তিস্তা গার্মেন্টস অ্যান্ড ফ্যাশন হাউজের সহকারী পরিচালক শাহজাহান আলী বলেন, নদীভাঙন কবলিত এলাকা হওয়ায় এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষকে কর্মের সন্ধানে ঢাকায় যেতে হয়। আমাদের এই গার্মেন্টসের মাধ্যমে স্থানীয় কর্মজীবীরা এলাকাতেই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে, এই পোশাক শিল্পকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে তিস্তা তীরবর্তী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার।
কারখানার শ্রমিক হাজেরা খাতুন বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙনে ঘরবাড়ি জায়গা জমি সব বিলীন হয়ে গিয়েছিল। পরে উপায় না পেয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নিই। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরে বাড়ির পাশে গার্মেন্টসে চাকরি করছি। পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করছি। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াতেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
সামিয়া আক্তার বলেন, ঢাকায় গার্মেন্টসের চাকরি করে বাসা ভাড়া, খাওয়া মিলে কোনো টাকা জমা হতো না। এখন বাড়ির পাশে চাকরি করে বেতনের সম্পূর্ণ টাকা জমা রাখছি। পাশাপাশি আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, তিস্তা পাড়ে গার্মেন্টস কারখানা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় নারী ও পুরুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই পোশাক কারখানা স্থানীয়দের অভাব দূর করবে।
পোশাক কারখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, তিস্তাপাড়ে হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এই গার্মেন্টস কারখানাটি তৈরি করা হয়েছে। এই এলাকায় বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে এই গার্মেন্টসটি আরও বড় পরিসরে করা যাবে। এতে হাজারো নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এফএ/জিকেএস