চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মাটির দোতলা বাড়ি হয়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থেকে আলপনা গ্রামের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। যে আলপনা গ্রাম দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে বহু বছর আগেই। তবে সম্প্রতি রংতুলির আঁচড়ে প্রত্যন্ত গ্রামের মাটির দোতলা বাড়ি হয়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র। এ বাড়ির প্রতিটি দেওয়াল যেন উন্মুক্ত ক্যানভাস। বাড়িটি একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত উৎসুক জনতা।
জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামের সাধারণ এ বাড়িকে অসাধারণ করে তুলেছেন শহিদা বেগম নামের এক গৃহবধূ।
বাড়ির কাচারিঘর, রান্নাঘর থেকে শুরু করে শোয়ারঘর পর্যন্ত, প্রতিটি ঘরের দেওয়াল আর মেঝে আলপনায় ভরা। দেওয়াল আর মেঝে সেজেছে হাতের ছোঁয়ার শিল্পকর্মে। তবে বাড়িটি মাটির হলেও দোতলা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাদামাটির পরিচ্ছন্ন দেওয়ালে তুলির আঁচড়ে শহিদা বেগম ফুটিয়ে তুলেছেন নানা ধরনের আলপনা, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থাপনা ও দৃশ্য। বাড়ির বাইরের অংশ এবং অন্দরমহল সব জায়গায় শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের আলপনা। মাটির পাতিলসহ কুটির শিল্পের নানা উপকরণ ও বাইরের অংশে লাগানো নানা লতা-গুল্ম শোভা বাড়িয়েছে বাড়িটির। তাই বাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্নের বাড়ি’।
শহিদা বেগম বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মানুষ ইট-পাথরের বাড়ি বড় বড় বাড়ি বানাচ্ছে। তবে আমাদের সেই চাহিদা নেই। আমরা মাটি দিয়ে তৈরি এই দোতলা বাড়িকেই সুন্দর করে সাজিয়েছি। এখানে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছি।’
তিনি আরও বলেন, সাংসারিক খরচ থেকে বাঁচানো টাকা দিয়ে শুরু করি বাড়ির আলপনা আঁকার কাজ। ধীরে ধীরে এটি এখন দৃষ্টিনন্দন বাড়িতে রূপ নিয়েছে।
নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামের বাসিন্দা আজহার আলী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা ছাড়া একজন নারীর নান্দনিক কারুকার্যে বিমোহিত দর্শনার্থীরা। দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ আসছে বাড়িটি দেখতে। আজ আমিও এলাম। দেখে খুবই ভালো লাগলো।
মতিউর রহমান ও আসমা খাতুন নামের এক দম্পতি বলেন, ‘আমরা রাজশাহী থেকে বরেন্দ্র এলাকায় ঘুরতে এসেছি। এসে জানতে পারলাম এখানে একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি আছে। তাই দেখতে এসেছি। সত্যিই চমৎকার বাড়ি।’
এসআর/জিকেএস