সুবর্ণচরে মা-মেয়ে ধর্ষণ

আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন আসামি মেহেরাজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৮:৫৬ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে ধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার আসামি মেহেরাজ (৪৮) ধর্ষণের বিষয়টি আদালতে স্বীকার করেছেন।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলামের আদালতে ফৌজদারি কাযবিধি ১৬৪ ধরায় জবানবন্দিতে এ স্বীকারোক্তি দেন।

আদালতের পরিদর্শক শাহ আলম বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামি মেহেরাজ ভুক্তভোগী মেয়েটিকে (১২) ধর্ষণ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আসামি আবুল খায়ের মুন্সির (৬৭) সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ মামলার অন্য আসামি হারুনকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী মা-মেয়ের ডাক্তারী পরীক্ষা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে ধর্ষণ/ধর্ষণ করতেই সিঁদ কেটে ঘরে চোর ঢোকান আওয়ামী লীগ নেতা

এর আগে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার মাস্টার মাইন্ড সাবেক মেম্বার আবুল খায়ের মুন্সি। তিনি গৃহবধূকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে সহযোগী মেহেরাজকে টাকা চুরির লোভ দেখিয়ে সিঁদকেটে ঘরে ঢোকান। পরে মা-মেয়েকে ধর্ষণ শেষে ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে সোনার অলংকার ও ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ভুক্তভোগীর করা মামলায় মুন্সি মেম্বার ও হারুনের নাম থাকলেও অপরজন ছিল অজ্ঞাত। বিষয়টি পুলিশের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। পরে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক ব্যক্তি মেহেরাজের বিষয়টি সন্দেহ করেন। পরে মেহেরাজকে আটকের পর তিনি পুরো ঘটনা অকপটে স্বীকার করেন এবং তার তথ্যমতে সিঁদকাটার কোদাল ও একটি দা পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টায় বাড়িতে মা-মেয়েকে একা পেয়ে সিঁদকেটে একজন ঘরে ঢুকে দরজা খুলে দেয়। পরে আরও দুইজন ঘরে ঢুকে তিন সন্তানের মা (৩০) ও তার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের (১২) ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ৯৯৯-এ কল পেয়ে চরজব্বর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। পরে ওই নারী তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন।

এদিকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে গৃহবধূ (৪০) দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার রায় হয় গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি)। রায়ে আসামি সাবেক মেম্বার রুহুল আমিনাহ ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই রায়ের ১২ ঘণ্টার মধ্যে একই উপজেলায় মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এনআইবি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।