নিখোঁজের দুদিন পর ছয় স্থানে মিললো যুবকের খণ্ডিত মরদেহ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০১:৫৫ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পদ্মা নদীর চর থেকে মিলন হোসেন (২৪) নামে যুবকের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশের নয়টি খণ্ড পৃথক ছয় জায়গায় পুঁতে রাখা হয়েছিল।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ সংলগ্ন পদ্মার চর থেকে লাশের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, চাঁদার দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাবেক সহ সভাপতি এস কে সজিবের নেতৃত্ব এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। পুলিশ সজিবসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।

নিহত মিলন হোসেন দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহিরমাদি গ্রামের মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ই ব্লকের ভাড়া বাসায় থাকতেন।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ জানান, বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে মিলন বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। ওই দিন সন্ধ্যায় তার স্ত্রী মুমো খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় জিডি করেন। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।মুঠোফোনের একটি কল লিস্টের সূত্রধরে প্রথমে মিলনের এক বন্ধুকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, আরেক বন্ধু সজিবের নেতৃত্বে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে সজিবসহ আরও চারজনকে আটক করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিলনকে হত্যা করে, লাশ টুকরো করে নদীর চরে পুঁতে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন। এরপর শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে তাদের নিয়ে পদ্মা নদীর চরে অভিযানে যায় পুলিশ। রাতভর অভিযান চালিয়ে নদীর চরের ছয়টি স্থান থেকে মিলনের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র বাঁধ বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে টাকার দাবিতে মিলনকে হত্যা করা হয়। জড়িতরা সবাই একে অপরের পরিচিত। মিলন বাড়ি থেকে অনলাইনে কাজ করতো। নিখোঁজের দিন তাকে মুঠোফোনে ডেকে হাউজিং এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। ওইদিন রাতেই তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করার সুবিধার্থে ধারালো অস্ত্র দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে নদীর চরে পুঁতে রাখা হয়েছিল। আর এই পুরো হত্যাকান্ডটির নেতৃত্ব দিয়েছে তারই বন্ধু সজিব। এর সাথে অন্যকোন ঘটনা আছে কিনা তা নিয়ে আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এস কে সজিব কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভাংচুর ও ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়। সেই মামলায় জেল খেটেছেন তিনি। এছাড়া তার নামে চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজিং এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, সজিবের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়।

আল-মামুন সাগর/এসআইটি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।