হৃদয়ের হাতে বসে থাকে হাজারো মৌমাছি
এতদিন দেখে আসছেন গাছে, পাহাড় কিংবা বাসাবাড়িতে বাসা বাঁধে মৌমাছি। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ঘটেছে ব্যতিক্রম ঘটনা। হৃদয় নামের এক যুবকের হাতে বসে হাজারো মৌমাছি। এমন দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নাচোল উপজেলার কসবা গ্রামে হৃদয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার এক হাতে বাসা বেঁধেছে মৌমাছি। যেন আস্ত এক মৌচাক। মৌচাক হাতে নিয়েই জীবনযাপন করছেন তিনি। বিশেষ প্রয়োজনে তা সরিয়ে রাখেন অন্য জায়গায়।
হৃদয় আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি গাছে গাছে চাক ভেঙে মধু সংগ্রহ করি। এজন্য মৌমাছির সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব অনেক দিনের। তাই আমার মৌমাছি খুব ভালো লাগে। আর এজন্য আমার ইচ্ছা সবসময় আমার সঙ্গে মৌমাছি থাকবে। এ চিন্তা থেকেই আমার ওস্তাদের কাছে কৌশল রপ্ত করে মৌমাছির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমার হাতেই বসে থাকে হাজারো মৌমাছি। মৌমাছিগুলো আমাকে কামড় দেয় না বরং ভালোবাসে। তাই আমার ইচ্ছা হলেই কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে হাত থেকে সরিয়ে অন্য স্থানে রাখতে পারি। যখন কোনো কাজ থাকে না তখন মৌমাছিগুলোকে হাতে করেই ঘুরে বেড়াই। এমনকী বাইসাইকেলে কোথায় গেলে তাদের সঙ্গে নিয়েই যায়। এতে কোনো সমস্য হয় না। এখন তারাই আমার সঙ্গী।’
একটি আধুনিক মধু সংগ্রহগার করার ইচ্ছা জানিয়ে হৃদয় আলী বলেন, ‘অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি কোনো অনুদান পেলে গড়ে তুলতে পারবো। যে মধু দিয়ে চাহিদা মিটবে সারা বছর।’
হৃদয়ের প্রতিবেশী আজিম আহমেদ বলেন, ‘অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই হৃদয়ের হাতে বসে মৌমাছি। রানীকে বশ মানিয়েই নাকি এটি সম্ভব হয়েছে। এ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ।’
আনারুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘শীতকাল এলেই চারদিকে রঙিন ফুলে সেজে ওঠে প্রকৃতি। এসময়টাতে ফুল থেকে মধু আহরণে চাক বাঁধে মৌমাছি। সাধারণ বিভিন্ন গাছের ডালে মৌচাকের দেখা মেলে। কিন্তু এবার মৌচাকের দেখা মিললো হৃদয়ের হাতে। এটি কীভাবে সম্ভব তাই দেখতে এসেছি। দেখে সত্যিই ভালো লাগলো।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুল জাব্বার বলেন, দিনমজুর হৃদয়ের ভাগ্য পরিবর্তনে দেওয়া হবে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ সরকারি প্রশিক্ষণ। বিষয়টি নিয়ে আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন উর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন।’
সোহান মাহমুদ/এসআর/এএসএম