৫ রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা, ইউপি মেম্বার বরখাস্ত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

ফরিদপুরের সালথায় রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় তাপস কুমার হোড় নামের এক ইউপি মেম্বারকে বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তিনি উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার এবং ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত নির্মল কান্তি হোড়ের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিচুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অর্থের বিনিময় নির্বাচন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পাঁচজন রোহিঙ্গার জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করার ঘটনাটি জানাজানি হয়। এদের মধ্যে ইউপি মেম্বার তাপস নাগরিক সনদপত্র শনাক্তকারী হিসেবে সিল দেন ও সই করেন। তবে এ ঘটনার নেপথ্যে থাকা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার পর গত ২৫ অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং কেন চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরপর ওই ইউপি মেম্বারের দাখিল করা কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনের ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার সই করা এক প্রজ্ঞাপনে চূড়ান্ত বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

ইউএনও আনিচুর রহমান বালী বলেন, সালথা নির্বাচন অফিসে ভোটার হওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের আবেদনের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের আবেদনপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে সই করেন ইউপি মেম্বার তাপস কুমার হোড়। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অভিভাবকের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ ও নাগরিক সনদ দিয়ে ভোটার হওয়ার জন্য সালথা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন সালথার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের খোরশেদ আলীর মেয়ে দিলদারা বেগম, মনিরুল ইসলামের ছেলে নুর মোস্তফা, খোকন মিয়ার ছেলে হাফিজুর রহমান, কালা মিয়ার মেয়ে বুশরা বেগম ও আব্দুল মানিকের ছেলে নুর বশার। তবে এসব নামে ফুলবাড়িয়া গ্রামে কারো হদিস পাওয়া যায়নি।

আবেদনে তারা যে জন্ম সনদগুলো জমা দেন সেগুলো সব কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে করা। তাদের নামে গত ১০ সেপ্টেম্বর বল্লভদী ইউনিয়ন থেকে নাগরিক সনদ দেওয়া হয়। এতে সই করেন ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুজ্জামান শাহীন। জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে সই করেছেন বল্লভদী ইউপির আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তাপস কুমার হোড়।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শামসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ৭ এপ্রিল তার ইউনিয়ন থেকে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নামে কোনো জন্ম সনদ ইস্যু করা হয়নি। এগুলো ভুয়া।

ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘ওই নাগরিক সনদের সই আমার না। এটি জাল সই। অর্থের বিনিময় নাগরিক সনদ দেওয়ার কথাটি ভুয়া।’

এন কে বি নয়ন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।