পঞ্চগড়

আগুন পোহাতে গিয়ে একমাসে দগ্ধ ২৯, একজনের মৃত্যু

সফিকুল আলম
সফিকুল আলম সফিকুল আলম , জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪

পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আগুন পোহানোর ঘটনায় একমাসে ২৯ জন দগ্ধ হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে তিনি মারা যান।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু জনজীবন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। ঠিকমতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে অনেককে। তবে এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। দগ্ধ হচ্ছেন অনেকে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৯ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে চলতি জানুয়ারি মাসেই দগ্ধ হয়েছেন ১৫ জন।

গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে বাড়ির উঠানে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের কাছে বসে হাতে-পায়ে উষ্ণতা নিচ্ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব ফেলাই বেওয়া। হঠাৎ তার পরনের কাপড়ে আগুন ধরে যায়। একপর্যায়ে পুরো শরীরে আগুন লাগলে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগুনে তার মুখ, গলা, বুক ও কোমর থেকে পা পর্যন্ত বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। ১০ দিন ধরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। ফেলাই বেওয়ার বাড়ি পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার তেলিপাড়া মহল্লায়।

তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর এলাকার তমিজ উদ্দিনের স্ত্রী রেজিয়া বেগম, উপজেলা সদরের কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের টুনিরহাট এলাকার মালেকুল ইসলামের ছেলে ওয়াবুল ইসলাম (২১), গরীনাবাড়ি ইউনিয়নের সিপাহিপাড়া ফুটকিবাড়ী এলাকার বিপ্লব হোনের চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ, সাতমেরা ইউনিয়নের গোয়ালঝাড় এলাকার দুলাল হোসেনের তিন বছরের মেয়ে আসমাউল হুসনা, অমরকানা ইউনিয়নের শিংপাড়া এলাকার মাসুদ রানার তিন বছরের ছেলে আবরার আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর এলাকার রেজিয়া বেগমের ছেলে হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মা সকালে আগুন পোহাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার কাপড়ে আগুন ধরে যায়। একপর্যায়ে হাত ও পা পুড়ে যায়। পরে মাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে আমার মা সুস্থ আছেন।’

ফেলাই বেওয়ার মেয়ে নহিমা বেগম বলেন, ‘আগুন পোহাতে গিয়ে আমার মা কীভাবে যে দগ্ধ হলেন বুঝতে পারিনি। তাকে দেখামাত্রই আগুন নিভিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আগুনে শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। খুব কষ্ট পেয়ে আজ সকালে মা মারা যান।’

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মখলেছুর রহমান বলেন, একমাসে ২৯ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হন। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

শীতের কারণে আগুন পোহানোর বিষয়ে আমাদের সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজন বলে জানান এ চিকিৎসক।।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।