বগুড়ায় এলজিইডির দুই কর্মচারীকে পেটানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ০৯:২৭ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০২৪

বগুড়ার গাবতলীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দুই কর্মচারীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।

মারধরের শিকার এলজিইডি অফিসের কর্মচারীরা হলেন, হিসাব রক্ষক ওয়াজেদ আলী ও হিসাব সহকারী রাজ্জাকুল হায়দার। মারধরের শিকার রাজ্জাকুল বাদী হয়ে গাবতলী মডেল থানায় বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ জামাল শাজাহান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনসহ অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শাজাহান গাবতলী পৌরসভার কাউন্সিলর ও এলজিইডির ঠিকাদার। তবে বৃহস্পতিবার মামলার দায়ের করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

মামলা সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে শাজাহান গাবতলী এলজিইডির ১৩ লাখ টাকার দুটি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেন। ওই দুটি কাজের জন্য তার এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জামানত হিসেবে জমা দেওয়া ছিল। প্রায় এক সপ্তাহ আগে শাজাহান ও দেলোয়ার প্রকল্প দুটির ফাইল খুঁজতে এলজিইডি অফিসে যান। এ সময় এলজিইডির হিসাব সহকারী রাজ্জাকুল তাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে ফাইলের খোঁজ করতে বলেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি, কিভাবে ফাইল হাজির হবে জানি না ফের আসতে হলে খবর আছে’ বলে হুমকি দিয়ে চলে যান।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে শাজাহান ও দেলোয়ার ১২ জন দুর্বৃত্তকে নিয়ে এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তাদের গালিগালাজ শুরু করেন। তাদের নিষেধ করলে রাজ্জাকুলকে কিল-ঘুষি ও এলোপাতাড়ি মারধর করে জখম করা হয়। এ সময় এলজিইডি অফিসের হিসাব রক্ষক ওয়াজেদ আলীকেও মারধরের ঘটনা ঘটে। যুবলীগ নেতা শাজাহান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ারসহ দুর্বৃত্তরা সেখান থেকে চলে গেলে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা দুই এলজিইডি কর্মচারীকে উদ্ধার করে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।

মামলার বাদী এলজিইডির হিসাব সহকারী রাজ্জাকুল বলেন, ঠিকাদার শাজাহান ও দেলোয়ার প্রকাশ্যে আমাদের মারধর করেছেন। সবাই সব ঘটনা দেখেছে। তাদের আইনগতভাবে বিচার আশা করছি।

অভিযুক্ত ঠিকাদার ও গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ জামাল শাজাহান বলেন, গত বছর এলজিইডি থেকে জামানতের এক লাখ ৩০ হাজার টাকা উঠার কথা। উপজেলা প্রকৌশলী ও হিসাব সহকারী দুজন ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে হয়রানি করে আসছেন। তাদের নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় আমার ওপরে ক্ষিপ্ত। গত বুধবার টাকা ফেরতের জন্য প্রকল্পের ফাইল চাইতে গিয়েছিলাম। এ ফাইলের জন্য রাজ্জাকুল গত চারমাস ধরে আমাকে হয়রানি করে আসছেন। এ নিয়ে সেখানে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। তবে কাউকে মারধরের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।

গাবতলী এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, তারা প্রকল্পের যে ফাইল খুঁজছিলেন সেগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আছে। বুঝিয়ে বলার পরেও তারা বারবার আমাদের দোষ দিচ্ছিলেন। গত বুধবারের মারধরের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজসহ সবরকম প্রমাণ আছে। আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালম আজাদ বলেন, এলজিইডির দুই কর্মচারীকে মারধরের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশ আসামিদের খুঁজছে।

আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।