অসময়ে নদীভাঙন, দিশেহারা মানুষ
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অসময়ের এ ভাঙনে হুমকির মুখে শত বছরের পুরোনো একটি বাজার, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বসতভিটা। এরইমধ্যে বেশকিছু কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ি বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নদীতে পানি কম থাকলেও প্রতিনিয়ত ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন এখন বাজারের খুব কাছে চলে এসেছে। বাজারের পশ্চিম পাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত তিন বছরে ওই অঞ্চলের মণ্ডলপাড়া, মুন্সিপাড়া, চুনালীপাড়া, চিথুলীয়া, পশ্চিমপাড়া, পশ্চিম পাটাধোয়াপাড়া ও খোলাবাড়ী এলাকার বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে বেশকিছু পুরোনো স্থাপনা।
স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে খুব তাড়াতাড়ি শত বছরের পুরোনো সানন্দবাড়ি বাজার, সানন্দবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র, সানন্দবাড়ি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, সানন্দবাড়ি ডিগ্রি কলেজ, সানন্দবাড়ি পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌলভীরচর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মৌলভীরচর উচ্চবিদ্যালয়, মৌলভীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌলভীরচর আলিম মাদরাসা, সানারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় আরিফুল ইসলাম, আজগর মিয়া ও ইমাম আলী বলেন, ‘সারা বছর নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকে। বর্ষাকালে তীব্র আকার ধারণ করে। তীরবর্তী শত শত বাড়িঘর, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে অন্যের জায়গায় ঠাঁই নিয়ে কোনোরকম জীবনযাপন করছেন। বছরের পর বছর ভাঙন চলমান থাকলেও কেউ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।’
চরআমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম বলেন, কয়েক বছরে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রাস করেছে ফসলি জমি। এখনো হুমকির মুখে বেশকিছু স্থাপনা। এ বিষয়ে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হয়ে এলে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাসিম উদ্দিন/এসআর/এএসএম