প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত, ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা
চাঁদপুরের কচুয়ার দারাশাহী-তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে অনির্দিষ্টকালীন পাঠদান বর্জন করেছেন শিক্ষকরা। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত মনির হোসেন পাটওয়ারীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা আয়োজন করা হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও দুইজন শিক্ষানুরাগীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে পূর্বের বিষয় নিয়ে আলোচনা সভা শুরু হলেও মনির হোসেন পাটওয়ারী বিষয়বস্তু বহির্ভূত আলোচনার সূত্র ধরে সভা চলাকালে প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে গালমন্দ ও মারধরের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে ঘটনা শোনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের, ইসমাইল হোসেন নয়ন ও সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম জানান, সভা চলাকালীন প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার তীব্র ও নিন্দা জানাই, পাশাপাশি দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করবো।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয় সভাকক্ষে যে ঘটনা ঘটেছে এটা আসলে কাম্য নয়, তবে প্রধান শিক্ষককে এসব গালমন্দ ও মারধরের হুমকিদাতাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ নিয়ে এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভা করা হয়। কিন্তু সভায় বহিরাগত ব্যক্তি মনির হোসেন উল্টো কমিটি নিয়ে আমাকে গালমন্দ করেন এবং মারধরের হুমকি দেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, তুলপাই-দারাশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধরের হুমকি দেওয়া দুঃখজনক। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আলী আশরাফ খান বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের হুমকি ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠদান যথারীতি চলবে। দোষীর বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত মনির হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় কমিটি গঠন নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ায় কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি সমাধান হয়।
শরীফুল ইসলাম/এফএ/এএসএম