মাদারীপুর-৩

বিজয় মিছিলে বোমা হামলা, মারা গেলেন আহত চা দোকানদার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০২৪

মাদারীপুর-৩ আসনে (কালকিনি-ডাসার-সদরের একাংশ) স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় মিছিলে বোমা হামলায় আহত চা দোকানদার এমারত সরদার (৪৫) মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত এমারত সরদার কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের ফরজউদ্দিন সরদারের ছেলে। তার সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।

এ ঘটনায় কালিনগর গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে পরাজিত করে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের তাহমিনা বেগম। এ আনন্দে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনের পরের দিন সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে একটি বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিলটি কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ থেকে ফাসিয়াতলা বাজারের যাওয়ার পথে মিছিলে হঠাৎ হামলা চালান নৌকার পরাজিত প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের কর্মী-সমর্থকরা।

অভিযোগ ওঠে, আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান সাহিদ পারভেজের নেতৃত্বে বিজয় মিছিলে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বেশ কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

বিজয় মিছিল থেকে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় এমারত সরদারসহ দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে এমারত সরদারকে ঢাকার প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত এমারত সরদারের ছেলে হাসান সরদার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে কালকিনি থানায় ২০ জনের নামে একটি মামলা করেন।

নিহতের স্ত্রী শাহানাজ বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ছেলেদের এতিম করা হয়েছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে পরাজিত নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক ও কালকিনির আলীনগর ইউনিয়নের চেয়াম্যান সাহিদ পারভেজ বলেন, একটি পক্ষ এ বোমা হামলার ঘটনার দোষ আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি বা আমাদের কোনো লোক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।

মাদারীপুর-৩ আসনের সদ্যবিজয়ী সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম বলেন, বিজয়ের পরে বিজয় মিছিল হতেই পারে। তবে সেখানে যদি প্রতিপক্ষ বোমা মেরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়, তা পরিকল্পিত। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকে ৯৬ হাজার ৩৩৩ পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ পান ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।