নৌকায় ওপেন সিল মারার নির্দেশ ইউপি মেম্বারের
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে নারী ভোটারদের নৌকায় ওপেন সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন সুবর্ণচরের চরবাটার ইউপি মেম্বার আকবর হোসেন শাহনাজ। এ-সংক্রান্ত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা জাফর কন্ট্রাকন্টরের বাড়িতে নৌকা প্রতীকের উঠান বৈঠকে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। আকবর হোসেন ওই ওয়ার্ডের মেম্বার।
৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে শাহনাজ মেম্বারকে বলতে শোনা যায়, ‘কোনো মা-বোন যদি পর্দার আড়ালে হান্দাই (ঢুকে) ভোটের সিল মারেন তাহলে আমরা বুঝবো আপনারা নৌকায় ভোট দেন নাই। আমার যারা মা-বোন তাদের উদ্দেশ্য করে বলি, কেন্দ্রের ভেতরে একটা পর্দা থাকে। ওই পর্দার ভেতরে হান্দাইবেন (ঢুকবেন) না। পর্দার বাইরে ওপেন সিল না মারলে বুঝবো আপনারা নৌকায় ভোট দেন নাই। ওপেন সিল মেরে দেখিয়ে দেবেন আপনারা শাহনাজ মেম্বারকে নৌকায় ভোট দিয়েছেন।’ এসময় সামনে থাকা লোকজন ‘ওপেন ওপেন’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বার আকবর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভোটের মাঠে আমাদের কত ধরনের কথাই বলতে হয়। ভোটের দিন আমরা সবাই দেখবো কে কোথায় ভোট দিচ্ছেন। তাই নারীদের বলেছি পর্দার বাইরে রেখে ব্যালটে সিল মারতে।’
নোয়াখালী-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি গত কয়েকদিন বলে আসছি, সুবর্ণচরের প্রশাসন নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করছে। তাদের সাহস পেয়েই শাহনাজ মেম্বার প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল আমিন সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুলিশ ভিডিওটি তদন্ত করছে।’
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন প্রস্তুত আছে। ভিডিওটি আমাকে পাঠান। দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
নোয়াখালী-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। এখানে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন। দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এএসএম