সাইকেলে ফুলের পসরা সাজিয়ে একাই নিজের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থী
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-১ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. আব্দুল হাই মাস্টার নিজেই নিজের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। জনগণের সেবক হওয়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন তিনি। জয়ী হওয়ার চেয়ে পরাজয়ের সংখ্যা বেশি থাকলেও মন ভাঙেনি তার। দলে নেতাকর্মী না থাকায় নিজেই মাইকিং করে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের।
আব্দুল হাই মাস্টার কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। বিগত বছরে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। কর্মজীবনে চর ভুরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি। সর্বশেষ তিনি ইউপি নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
জানা গেছে, বিগত সময়ে আব্দুল হাই মাস্টার সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টির ব্যানারে ভূরুঙ্গামারী নাগেশ্বরী-৩ আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সেই থেকে প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে পিছপা হননি আব্দুল হাই মাস্টার।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যখন অন্যান্য দলের প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় লিফলেট ও জনসংযোগ শুরু করেছেন, তখন তিনিও বেরিয়ে পড়েছেন সাইকেলে মাইক আর ফুলের পশরা সাজিয়ে প্রচারাণার মাঠে। তবে তিনি মিটিং মিছিলের পক্ষে না। সঙ্গে কর্মী না থাকায় নিজেই নিজের কর্মী হয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ভোটারের কাছে। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো সাইকেলে পথঘাট ও বাজার বন্দরে চালাচ্ছেন নিজের প্রচারণা। কৃত্রিম গোলাপ ফুল, হ্যান্ডমাইক ও জিনিসপত্রের ব্যাগ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম বলেন, আব্দুল হাই মাস্টার নামের চেয়ে ‘হাই পাগলা’ নামে বেশি পরিচিত। নির্বাচনে দাঁড়ানো তার নেশা। এমন কোনো নির্বাচন বাকি রাখেননি যেখানে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাদ রেখেছেন। ইউপি নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন এমনকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আব্দুল হাই মাস্টার।
আব্দুল হাই মাস্টারকে অনেকে হাই পাগলা নামে জানে। তিনি যখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সেসময় নিজ হাতে হাট বাজারের ড্রেন ও বাথরুমের ময়লা পরিষ্কার করার কারণে পরিচিতরা তাকে হাই পাগলা নামে ডাকেন।
প্রার্থী আব্দুল হাই মাস্টার বলেন, মানুষের সেবা করতে আমার ভালো লাগে। আজীবন সুখে দুঃখে মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করতে চাই। এ কারণে বিভিন্ন ইলেকশনে আমি থেমে থাকি না। কেননা আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবসেবা করা।
তিনি আরও বলেন, আমার কোনো টাকা পয়সা নেই। জনগণই আমার সব। জনগণ যদি চায়, আমাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। আমি বরাবরই জনগণের সেবা করতে প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ এবার আমি এমপি হতে পারবো।
ফজলুল করিম ফারাজী/এফএ/জিকেএস