চুয়াডাঙ্গায় দিলীপ কুমার আগরওয়ালার ওপর হামলার অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন ভান্ডারদহ এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় তার গাড়িবহরের গতিরোধ করে প্রার্থীকে লাঞ্ছিত ও অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা শহরসহ শংকচন্দ্র ও পার্শ্ববর্তী কুতুবপুর ইউনিয়নজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ভান্ডারদহ গ্রামে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম টহলে রয়েছে।

স্থানীয়র জানান, সদর উপজেলায় প্রচারণা শেষে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গাড়িবহর নিয়ে নতুন ভান্ডারদহ এলাকায় যাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। নির্বাচনী অফিসে পৌঁছানোর আগেই তার গাড়িবহরের গতি রোধ করা হয়। গাড়ি আটকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নৌকার সমর্থকরা। পরে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা গাড়ি থেকে নামলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সদর থানার একাধিক টিম পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থলে যান জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এসময় কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হাসানুজ্জামান মানিক, ভান্ডারদহ গ্রামের ফারুক হোসেন, সুমন ও শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের যুগিরহুদা গ্রামের হাফিজুর রহমানকে পুলিশ হেফাজতে থানায় নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন, জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ও নির্বাচনী কর্মী নাজনীন আক্তার, রাকিব, সালমান ও আফিলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

ভান্ডারদহ গ্রামের আবু ছিদ্দিক বলেন, ‘আমরা ঈগলের অফিসে বসেছিলাম, আমাদের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগারওয়ালা আসবেন। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে নৌকা প্রতীকের লোকজন আমাদের অফিসের সামনে এসে উল্টাপাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। আমাদের নেতা আসার সঙ্গে সঙ্গেই তারা হামলা চালায়।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন বলেন, ‘হামলার সময় নারী সমর্থক ও নারী নেত্রীদের ওপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালানো হয়। নারী কর্মীদের ওপর হামলার সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন হাসানুজ্জামান মানিকসহ তার লোকজন। এসময় বেশ কয়েকটি রিকশা ভ্যান ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা অভিযোগ করে বলেন, ‘আধাঘণ্টা ধরে গাড়ি আটকে আমার নামের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অশালীন স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। আমি গাড়ি থেকে নামলে তারা মারমুখী আচরণ করে। পরে পুলিশকে খবর দিই। পরে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল একজন প্রার্থী হিসেবে কিছুটা সম্মান পাবো। কিন্তু যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাকে টানা হেঁচড়া, ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে। একবার নয়, দফায় দফায় আমার এবং আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। এসবের নেতৃত্বে ছিলেন কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিক।’

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদ জানান, খবর পেয়ে একাধিক টিম নিয়ে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে।

হুসাইন মালিক/এএইচ/জেআইএম