রাবির হলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, রহস্য জানতে চায় পরিবার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে ফুয়াদ আল খতিবের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য জানতে চায় তার পরিবার। এর আগে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফুয়াদ আল খতিবের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মাওলানা মো. আমিনুল ইসলাম সাজুর ছেলে।
ফুয়াদ আল খতিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে থাকতেন। তার মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছে।
ফুয়াদ আল খতিবের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে। তারা ফুয়াদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান।
নিহত ফুয়াদের চাচা গাইবান্ধা শহরের আদর্শ দ্বি-মূখী আলিম মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা মো. রুহুল আমিন বলেন, এমন একটি আকস্মিক মৃত্যুরে খবরে আমরা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি। সন্তানের মৃত্যুর খবরে শোকে কাতর ফুয়াদের বাবা-মা।
তিনি আরও বলেন, ফুয়াদ শুক্রবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরিক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসেছিলেন। পরিক্ষা দিয়ে পরদিন শনিবার বেলা ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে ফিরে যান।
ধোপাডাঙ্গা গ্রামের ফুয়াদের এক বন্ধুর ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিংয়ের বরাতে তিনি বলেন, ফুয়াদ তার বন্ধুকে শনিবার রাত ১২ টার দিকে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়েছে, তার (ফুয়াদের) নিয়োগ পরীক্ষা ভালো হয়েছে, ওই ম্যাসেজ আমি দেখেছি। ফুয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে চ্যাটিং করেছিল।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে চাচা রুহুল আমিন বলেন, ফুয়াদ অত্যন্ত নরম এবং শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলেন। বাড়িতে এসে তার মাঝে কোনো অস্বাভাবিকতা আমরা দেখিনি। আত্মহত্যা করতে পারে এমন ঘটনা নেই, আর আছে বলে আমাদের মনেও হয়না।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা শুনেছি তার (ফুয়াদের) মুখ দিয়ে নাকি লালা-রক্ত পড়েছে, শরীর কালো হয়েছিল, বিষয়টি বুঝতেছিনা। বিষয়টি নাকি তদন্ত হচ্ছে, আমরাও তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চাই।
শনিবার বাড়ি থেকে ফিরে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে মশারি টানিয়ে হলে তার সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে পড়েন ফুয়াদ। আগের দিন দীর্ঘ যাতায়াত করে ফেরায় সকালে রুমে তাকে কেউ ডাকতে যায়নি। পরে দুপুর পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠলে, পাশের কক্ষের এক বন্ধু ডাকাডাকির পর সাড়া না পেয়ে শরীর ধরে নাড়া দেয় এবং এসময় সে ফুয়াদের মুখ দিয়ে লালা পড়ছে ও পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে বলে দেখতে পায়। পরে কয়েকবন্ধু মিলে বিকেল তিনটার দিকে অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান বন্ধুরা। এসময় সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসকরা ফুয়াদ কয়েক ঘণ্টা আগে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন।
শামীম সরকার শাহীন/এমএসএম