ফুল সজ্জিত রিকশায় চড়িয়ে শিক্ষককে বিদায়, পরানো হলো সোনার আংটি
পিচঢালা গ্রামীণ সড়ক ধরে রঙিন বেলুন আর ফুলে সজ্জিত রিকশায় চড়ে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শিক্ষক। সামনে-পেছনে ছিল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা। প্রিয় শিক্ষকের বিদায়কে স্মরণীয় করতে শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশেষ এ আয়োজন করেন।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) নজরকাড়া এ শোডাউন দেখা গেলো যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা-চতুরবাড়িয়া সড়কে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে খালিয়া-কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কে কে আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। এরপর একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা। এসময় বিদায়ী শিক্ষক আক্তারুজ্জামানকে সোনার আংটি পরিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা ও বিভিন্ন উপহারসামগ্রী। এরপর সুসজ্জিত রিকশায় চড়িয়ে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে।
১৯৯৩ সালে খালিয়া কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন আক্তারুজ্জামান। চারবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। স্ত্রী ফিরোজা বেগমও একই পেশায় যুক্ত। এ দম্পতির একমাত্র মেয়ে আফরোজা সুলতানা মিথি গণিতে এমএসসি ও ছেলে আরিফুজ্জামান ফাহিম কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি সম্পন্ন করেছেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ রানা বলেন, ‘আক্তার স্যার প্রথম থেকেই এ বিদ্যালয়ে রয়ে গেছেন। পদোন্নতি গ্রহণ করেননি। তার কারণেই বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়টি পিইসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলায় প্রথম হয়েছে। এজন্য তার বিদায় বেলায় ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’
অবসরে যাওয়া সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার তিন দশক শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। শেষ দিনে আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, এটি আমার জীবনের অনেক বড় পাওয়া।’
রকিব উদ্দিন মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম ছরোয়ার, কে কে আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবীরুজ্জামান মন্টু, খালিয়া কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ওমর আলী বিশ্বাস, বর্তমান সভাপতি নুরুল ইসলাম ডালিম, জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি ইকরামুল কবীর উজ্জ্বল প্রমুখ।
মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম