জয়পুরহাট
নিম্নমানের আলুর বীজে কৃষকের মাথায় হাত
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আলু রোপণের ১৫-২০ দিনেও গজায়নি কোনো চারা। মাঠের জমির বেশিরভাগ অংশ চারা বিহীন অবস্থায় খালি পড়ে আছে। এতে কৃষকরা চলতি আলু মৌসুমে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি স্থানীয় আলুবীজ ব্যবসায়ীরা এবার খাবার আলুর বস্তায় সিল-ট্যাগ লাগিয়ে বীজ হিসেবে বিক্রি করে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ৫ বিঘা, পৌর এলাকার মুন্সিপাড়ার কৃষক আলি আনসার চপলুর ৩ বিঘা, গোলাপের ১ বিঘা, পূর্বপাড়ার কৃষক মোহাতাব উদ্দিনের ৫ বিঘা, আজিজুল ইসলামের ৩ বিঘা, সরদারপাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের ২
বিঘা, রুপচাঁন মিয়ার ৮ বিঘাসহ আরও অনেক কৃষকের রোপণ করা মিউজিকা জাতের আলু চারা গজায়নি।
জমিতে দু’একটি গাছ জন্মালেও পুরো ক্ষেত খালি পড়ে রয়েছে। অথচ তারা নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন বীজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মিউজিকা জাতের বীজ আলু কিনেছিলেন। যা তারা ১৫ দিন আগে ২৭ বিঘা জমিতে রোপণ করলেও ১০ ভাগ চারাও গজায়নি।
আরও পড়ুন: সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলুবীজ ও সার
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, এ পর্যন্ত তাদের জমিতে খরচ হয়েছে প্রতি জনের বিঘা প্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার মতো। যা থেকে তারা ১০ মণ আলুও পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন।
করিমপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন (৪৫) বলেন, ইটাখোলা বাজারের ডিলার মিজানুরের কথা বিশ্বাস করে ৪২ হাজার টাকার নীলসাগর কোম্পানির বি-গ্রেড আলু বীজ কিনে রোপণ করি। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে চারা গজায়নি। এতে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে। তার মতো আশপাশ এলাকার প্রায় ৫০-৬০ জন কৃষকেরও আলু রোপণ করে চারাগাছ গজায়নি।
ইটাখোলা বাজারে নীলসাগর কোম্পানির ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, কৃষকদের সমস্যার বিষয়টি জানার পর কোম্পানিকে অবগত করেছি। কোম্পানি লোকজন আসলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আসলে এর আগে কোনো বছর এমন ঘটনা ঘটেনি। এবারই প্রথম।
পাঁচশিরা বাজারের কাজি সিডের সাব-ডিলার নজরুল ইসলাম বীজ সরবরাহের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই কৃষকদের পাশাপাশি তিনি নিজেও ৬ বিঘা জমিতে মিউজিকা আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যারা তার কাছ থেকে বীজ আলু কিনেছেন তাদর তিনি মূল মালিকের কাছ থেকে ক্ষতি পূরণ নিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি বলেন, রোপণের ২০ দিন পরও জমিতে গাছ না জন্মানোর বিষয়টি তাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগও তারা পাননি। অভিযোগ পাওয়া গেলে কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএইচ/জিকেএস