আইনমন্ত্রীর আয় কমলেও নগদ টাকা বেড়েছে কয়েকগুণ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন দাখিল করেছেন তিনি। ৩ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন।
মনোনয়নের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আনিসুল হকের নগদ টাকা বেড়েছে, তবে কমেছে তার বাৎসরিক আয়। হলফনামায় প্রায় ১১ কোটি টাকা নগদ দেখিয়েছেন। অথচ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নগদ ছিল ৬ লাখ টাকা। আর ব্যাংকে তার জমা আছে ৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৭ টাকা, ২০১৮ সালে হলফনামা অনুযায়ী ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ টাকা ছিল। এবার আয়ের নতুন উৎস হিসেবে হলফনামায় যুক্ত হয়েছে বাড়ি ভাড়া।
হলফনামা অনুযায়ী আনিসুল হকের আয় কমেছে। ২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী তার বছরে আয় ছিল ৮ কোটি টাকা, কিন্তু এবারের হলফনামা তার আয় কমে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫ লাখ ৯৪ লাখ ৯২৭ টাকা। যা গতবারের তুলনায় সাড়ে ৭ গুণ কম।
কৃষি ও মৎস্য খাত থেকে বছরে ৪৩ লাখ টাকা, যা ২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী ছিল ৩ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার ৫৬০ টাকা। বাড়ি ভাড়া ৫ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৯ টাকা, যা বিগত নির্বাচনের হলফনামায় ছিল না। মন্ত্রী হিসেবে ভাতা ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ব্যাংকের মুনাফা এবং এফডিআরের সুদ বাবদ ৪৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৮ টাকা, যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় ব্যাংক সুদ থেকে পেতেন ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৬০ টাকা। প্রয়াত মায়ের নামে থাকা শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ টাকা বছরে আয় দেখিয়েছেন। ২০১৮ সালের হলফনামায় শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত বাবদ আয় ছিল ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ টাকা থাকলেও এবার তা নেই।
হলফনামায় মন্ত্রী অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের কাছে নগদ ১০ কোটি ৯২ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৯ টাকা দেখিয়েছেন। এছাড়া ১৪ হাজার ৯৩ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আছে বলে উল্লেখ করেছেন।
২০১৮ সালের পর গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী সিটিজেন ব্যাংক ও এক্সিম বাংলাদেশের ৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ারের মালিক হয়েছেন। এছাড়া স্থায়ী আমানতে মন্ত্রীর বিনিয়োগ আছে ৫ কোটি ৭৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৮ টাকা। মোটরগাড়ি আছে চারটি, যা একাদশ নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ ছিল দুটি। আর স্বর্ণালঙ্কার আগের মতো ২০ ভরি আছে।
মন্ত্রী স্থাবর সম্পদ হিসেবে আট বিঘা কৃষি জমি, এক একর ২২ দশমিক ৫ শতাংশ অকৃষি জমি, বাড়ি এবং ফ্ল্যাট থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া যৌথ মালিকানায় ১৬ দশমিক ৮৯ বিঘা কৃষি জমি, একটি বাড়ি এবং তিনটি মৎস্য খামার আছে। তবে কোনো প্রকার দায় নেই আইনমন্ত্রীর।
আনিসুল হক পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আনিসুল হক। তার বাবা প্রয়াত আইনজীবী সিরাজুল ইসলামও সংসদ সদস্য ছিলেন।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসজে/এমএস