দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
কিডনি ডায়ালাইসিসে খরচ বেড়েছে হাজার টাকা
দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রলজি বিভাগের কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে রেনাল কেয়ার পানির সরবরাহ না থাকায় প্রতি ডায়ালাইসিসে হাজার টাকা খরচ বেড়েছে। এছাড়া ৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন বিকল হয়ে পড়ে থাকায় অনেক কিডনি রোগী ভর্তির সুযোগ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে বেশি টাকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়লাইসিস করাচ্ছেন।
একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য সাধারণত ডায়ালাইজার ৮০০ টাকা, ব্লাড লাইন ২৪০ টাকা, সেলাইন ১০০, হেপারিন ইনজেকশন ৩৯০, জেনটিন ও এভিল ইনজেকশন ২০, গ্লোভস ৫০, সিরিঞ্জ ২০, রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার- বি পানি- ৯০০, টেপ, হেক্সিসল ও অন্যান্য ৫০ টাকা, ডায়ালাইসিস ৪০০ ও ৩০ টাকা চাঁদাসহ ২৯০০ টাকা খরচ হয়।
রোগী ও দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিভাগটি চালু হওয়ার পর কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য শুধুমাত্র ৪০০ টাকা ফি দিয়ে ডায়ালাইসিস হতো। সব ওষুধ হাসপাতাল থেকেই সরবরাহ করা হতো। পরে সব ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলেও রেনাল কেয়ার-এসি এবং রেনাল কেয়ার-বি পানি সব রোগীকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু গত ৭ দিন ধরে এই পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর একবার ডায়ালাইসিস করতে খরচ হতো ২০৩০ টাকা। সেখানে এখন রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার-বি পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে ৯০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এতে করে ডায়ালাইসিসের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৩০ টাকা।
এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে ৩০টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ৯টি মেশিন বন্ধ থাকায় অনেক রোগী কিডনি ডায়ালাইসিস করতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজন রাসেদ জামান জানান, এই হাসপাতালে আগে ডায়ালাইসিস ফি ৪০০ টাকা দিয়ে সব পাওয়া যেতো। পরে সব ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলেও রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার- বি সরবরাহ ছিল। কিন্তু গত ৬ দিন ধরে সেই পানিটিও সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার- বি পানি প্রতি গ্যালন ৯০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এতে করে রোগীর চিকিৎসা খরচ বেড়ে গেছে। তিনি জরুরিভাবে এই পানি সরবরাহ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কারণ বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খরচ দ্বিগুণ।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে নেফ্রোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. ফজলে এলাহী বলেন, কিছু কিছু রোগীকে রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার- বি পানি সরবরাহ করা হয়েছে। তবে সংকট রয়েছে। বাকিটা তিনি হাসপাতালের পরিচালকের কাছে জেনে নিন।
বিষয়টি জানার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম নুরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে নাম জানাতে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, এই হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগে ৩০টি কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে। এরমধ্যে ৯টি বিভিন্ন সময় নষ্ট হয়ে গেছে। রেনাল কেয়ার- এসি ও রেনাল কেয়ার- বি পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যা এক সপ্তাহের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এফএ/এএসএম