এমপি মোকতাদিরের আয় কমলেও বেড়েছে নগদ টাকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৬:১০ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

টানা চতুর্থবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী, উবায়দুল মোকতাদিরের নগদ টাকা, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র বেড়েছে। তবে কমেছে আয় ও ব্যাংকে রাখা টাকা।

তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুনের বেড়েছে ব্যাংকে রাখা টাকা। ফাহিমা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক।

হলফনামা অনুযায়ী উবায়দুল মোকতাদিরের নগদ টাকা রয়েছে ২০ লাখ, ২০১৮ সালে উল্লেখ ছিল দুই লাখ। সেসময় তার স্ত্রীর নগদ টাকা উল্লেখ করা হয়নি। ২০১৮ সালে মোকতাদিরের ব্যাংকে টাকা ছিল ১৪ লাখ ১২ হাজার ৯৫ টাকা, যা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী কমে দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৯৫ হাজার ৯৬১ টাকা। তার স্ত্রীর ব্যাংকে জমা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, কিন্তু এবারের হলফনামায় সাত লাখ ৯৯ হাজার ৫০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থীর কোনো শেয়ার ব্যবসা না থাকলেও এবারের হলফনামায় ১০ লাখ টাকার শেয়ার থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আগে কোনো সঞ্চয়পত্র বা এফডিআর না থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৫ টাকার এফডিআরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুনের এক কোটি ২ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, পেনশন স্কিম ও ব্যক্তিগত ঋণ ছিল; যা এবারও রয়েছে। তবে দুই ভরি স্বর্ণালংকার বেড়ে হয়েছে ৫৮ ভরি।

পেশায় রাজনীতি, কৃষি, ব্যবসা ও কনসালট্যান্সি এ প্রার্থীর গত পাঁচ বছরে কৃষিখাত থেকে আয় কমেছে। আগে বছরে কৃষিখাত থেকে চার লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় হতো, এবার দেখানো হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ব্যবসা থেকে ২০১৮ সালের হলফনামায় আয় উল্লেখ ছিল ২৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা, যা গত পাঁচ বছরে কমে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ২৭ হাজার ৭০০ টাকা। আগে শেয়ার ব্যবসায় কোনো আয় ছিল না। এখন শেয়ার থেকে তিন লাখ ৯৪ হাজার টাকা আয় করেন মোকতাদির। নিজের পেশা থেকে আগে আয় হতো ২৬ লাখ ২২ হাজার টাকা, এখন কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২৫ লাখ টাকায়।

তবে মাছচাষে বছরে লাভ বেড়েছে ক্ষমতাসীন দলের এ এমপির। তিনি আগে বছরে মাছচাষ করে আয় করতেন আট লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকায়। ব্যাংক সুদ, টকশো, বিভিন্ন সভা সেমিনারের সম্মানী, বই প্রকাশ ও পত্রিকার কলাম লেখার সম্মানী বাবদ আগে তার বছরে আয় হতো তিন লাখ ৭৯ হাজার ৪৪৪ টাকা, এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ৫২০ টাকায়। তার করমুক্ত আয় ছিল ২০ লাখ ২০ হাজার ১০০ টাকা, ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছে ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭০ টাকা।

মোকতাদির চৌধুরীর মোট ৫৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৮৫ হাজার টাকার ঋণ রয়েছে। এরমধ্যে কৃষিঋণ ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৪৭, গাড়ি কেনা আট লাখ ৩১ হাজার ৫৯৪ ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের অগ্রিম ৩০ লাখ ১৬ হাজার ৪৪ টাকা রয়েছে।

মোকতাদির চৌধুরীর নিজের পৈতৃক সূত্রে পাওয়াসহ ৪৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪৪০ টাকার কৃষিজমি রয়েছে। তার স্ত্রীর রয়েছে ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৬০০ টাকার কৃষিজমি রয়েছে। এছাড়া প্রায় ৫০ লাখ টাকার অকৃষি জমি ও পুকুর রয়েছে এ দম্পতির। এছাড়া তার নামে পূর্বাচলে ৩১ লাখ ৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জমি রয়েছে, যা এখনো রেজিস্ট্রি হয়নি। পাশাপাশি তিন কোটি ৮ লাখ টাকা দামে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে একটি ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য দিয়েছেন, যা এখনো রেজিস্ট্রি হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।