ভোটের লড়াইয়ে মা-ছেলে

শামীম সরকার শাহীন
শামীম সরকার শাহীন শামীম সরকার শাহীন গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধায় দুটি সংসদীয় আসনে এবার মা-ছেলে ভোটের মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে মা মর্জিনা খান গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন থেকে আর ছেলে জিয়া জামান খান গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের প্রার্থী হয়েছেন।

মা-ছেলে দু’জনই ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মনোনীত ‘আম’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মা-ছেলে উভয়কেই বৈধ প্রার্থী বলে ঘোষণা দিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

একইসঙ্গে দুই আসন থেকে মা ও ছেলের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আলোচনা ও কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পুরোনো অভিজ্ঞতা থাকলেও জিয়া জামান খান রংপুর বিভাগের সর্বকনিষ্ঠ এমপি প্রার্থী। ১৯৮৮ সালে জন্ম নেওয়া জিয়া জামান খানের বর্তমান বয়স ৩৫ বছর। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গাইবান্ধা-২ (সদর) আসন এবং গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে দুই বারের উপ-নির্বাচনেই এনপিপির প্রার্থী হয়ে জিয়া জামান খান নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তার মা মর্জিনা খান এবারই প্রথম নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে মর্জিনা খানসহ বৈধ প্রার্থী ১১ জন। আসনটিতে হেভিওয়েট প্রার্থী জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও আওয়ামী লীগের আফরুজা বারী। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। লাঙ্গল প্রতীকে আসনটির উপ-নির্বাচনসহ ২০১৮ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বিাচিত হন তিনি।

অপরদিকে গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে জিয়া জামান খান প্রিন্সসহ বৈধ পাঁচ প্রার্থী হলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মাহাবুব আরা বেগম গিনি, জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আব্দুর রশিদ সরকার, জাসদের গোলাম মারুফ মনা ও জাকের পার্টির জহুরুল ইসলাম। হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এ আসনের টানা তিনবারের এমপি। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্বেও আছেন।

জিয়া জামান খান গাইবান্ধার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত খালেকুজ্জামান খান দুদুর একমাত্র ছেলে। তিনি ন্যাশনাল পিপলস পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব ও প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। আর তার মা মর্জিনা খান ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক।

গাইবান্ধা পৌর শহরের ডেভিড কোম্পানি পাড়ায় বর্তমানে পি.কে. বিশ্বাস রোডে পৈত্রিক নিবাস জিয়া জামান খানের। তবে মা মর্জিনা খানসহ স্বপরিবারে ঢাকায় থাকেন জিয়া জামান। তার একমাত্র বড় বোন ডা. সাজিয়া খান বিপাশা চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়া জামান খান বলেন, গাইবান্ধা জেলাজুড়ে তার পরিবারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাবা প্রয়াত খালেকুজ্জামান খান দুদু গাইবান্ধার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গাইবান্ধায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক সচিব ছিলেন।

একজন তরুণ উদীয়মান নেতা হিসেবে ভোটের মাঠে নিজেকে যোগ্য প্রার্থী দাবি করে জিয়া জামান খান বলেন, বাবার জনপ্রিয়তার কারণেও আমার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। আমি মনে করি, বর্তমানে তরুণ ও যুবকরাই রাষ্ট্রের একমাত্র শক্তি। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবার ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ্।

মা-ছেলের একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে মুঠোফোনে মর্জিনা খান বলেন, মরহুম খালেকুজ্জামান খান দুদুর স্ত্রী হিসেবে আমার জনপ্রিয়তা এবং নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও আছে। আমার বাবা প্রয়াত মজির উদ্দিন তালুকদার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার জালালপুর স্টেটের জমিদার ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জড়িত আছি। আমি সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি এবং আগামীতেও করবো।

মর্জিনা খান আরও বলেন, এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, তারা সমর্থন দিয়েছেন বলেইতো ভোটের মাঠে নেমেছি। এর আগে পরপর তিনটি নির্বাচনে প্রচারণা ও গণসংযোগসহ ছেলের ভোটের মাঠের সমস্ত কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। আশা করি, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে দলমত নির্বিশেষে মানুষ আম প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাদের মা-ছেলেকে জয়ী করবেন।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।