স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামানের নামে ২২৯৯ কোটি টাকার ঋণ!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের বার্ষিক আয় ৫০ কোটি ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৫ টাকা। যা ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে হলফনামায় উল্লেখ করা আয়ের তিনগুণ। তার ১০টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দুই হাজার ২৯৯ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।
২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, একরামুজ্জামানের বছরে আয় ছিল ১৬ কোটি ৭৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪২ টাকা। আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয় কৃষিখাত, বাড়িভাড়া, ব্যবসা, সঞ্চয়পত্র, পেশা, চাকরিসহ অন্যান্য ব্যবসা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে তার নগদ অর্থ ছিল ৭৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৭ টাকা, যা এবার বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯২ টাকা। তার স্ত্রীর নগদ অর্থ ছিল ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৬ টাকা, এবার উল্লেখ করা হয়েছে ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৩ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার নামে জমা করা আছে এক কোটি ২১ লাখ ৩১ হাজার ১৪৯ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭৬৬ টাকা।
একরামুজ্জামানের নামে ঋণপত্র ও স্টক এক্সচেঞ্জে ২৯৬ কোটি ৪৭ লাখ ১ হাজার ৫২৭ টাকার শেয়ার এবং তার স্ত্রীর নামে দুই কোটি ৩ লাখ ৮১ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া অংশীদারি ব্যবসায় মূলধন তিন কোটি ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯৩ টাকা, ঋণ ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং শেয়ার মানি ডিপোজিট ৪২ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৪৫ টাকা। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার বৈদেশিক মুদ্রা ছিল ১০ লাখ ৬২ হাজার ইউএস ডলার ছিল কিন্তু এবার কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দেখানো হয়নি।
২০০৮ সাল থেকে অংশগ্রহণ করা নির্বাচনগুলোতে জমা দেওয়া হলফনামায় ৩০ হাজার টাকার ৩০ তোলা স্বর্ণালংকার রয়েছে বলে উল্লেখ করে আসছেন একরামুজ্জামান, যা এবারও আছে। তবে গত ১৫ বছরের কোনো হলফনামায় স্ত্রীর স্বর্ণালংকারের বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান তার ১০টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দুই হাজার ২৯৯ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে কানসাই নিরোলাক পেইন্টস, স্টার সিরামিক লিমিটেড, আরএকে সিরামিকস, অটোমেটিক ব্রিকস অ্যান্ড সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেড, রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, এসএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্ট, স্পিডওয়ে ইন্টারন্যাশনাল, এসএম নিটওয়্যার লিমিটেড, এসএম স্পিনিং মিলস, স্টার পোরসেলিন লিমিটেড ও মোহাম্মদ ফুড অ্যান্ড এলাইজড প্রাইভেট লিমিটেড।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বহুল আলোচিত সংসদীয় আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর)। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা একরামুজ্জামান। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত বদরুদ্দোজা ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের কাছে পরাজিত হন তিনি।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জেআইএম