রামুতে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে বন্যহাতির পাল
কক্সবাজারের রামুতে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বন্যহাতির একটি দল। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকে উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড লট উখিয়ারঘোনার নাপিতারঘোনা এলাকায় হাতির দলটি ঢুকে কলাবাগানসহ ফসলি জমিতে তাণ্ডব চালায়।
এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় হাতির পালের অবস্থান বুঝতে না পেয়ে সকালে অনেকে হাতির সামনে পড়ে। এ সময় পালাতে গিয়ে আহত হন বেশ কয়েকজন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিনের বেলায়ও ওই এলাকার ঝোপঝাড়ে হাতির পাল দেখা গেছে। মাঝে মাঝে তারা এদিক-সেদিক চলাফেরা করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আল মামুন নামে এক যুবক জানান, লোকালয়ে আসা হাতির পালে ৬টি হাতি রয়েছে। এদের মাঝে দুটি সাবক আর চারটি বয়স্ক হাতি। কিছু সময় পর পর হাতিগুলো এদিক সেদিক ছুটছে। তাদের চলাচলে ভয়ে পালাতে গিয়ে দু’একজন আহতও হয়েছেন। হাতিগুলোর তাণ্ডবে অনেক ফসলি জমি ও ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
এলাকার সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হাবিব জানান, উখিয়ারঘোনা পাহাড়ি পার্শ্ববর্তী এলাকা হওয়ায় প্রায় সময়ই পাশের পাহাড় থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতির পাল। বুধবার গভীর রাতে হাতির পাল এলাকায় ঢুকে পড়ে। হাতির পালটি এলাকায় কলাবাগান, নরম শস্যগুলো সাবাড় করছে। দিনেও ওই এলাকায় অবস্থান করছে হাতিগুলো।
এদিকে খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে যায়। তারা হাতির দলটিকে নিরাপদে পাহাড়ি অঞ্চলে ফিরে যেতে যৌথ প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা স্বর্ণা বলেন, খবর পেয়ে সকালে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পাহাড়ের কিনারে ঝোপঝাড়ের ভেতর অবস্থান করা হাতির পালে ৫-৬টি হাতির দেখা মিলেছে। অবস্থা দেখে মনে হলো খাবারের সন্ধানে হাতিগুলো লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। ঘনবসতি হওয়ায় অনেকে জানতেন না হাতি এসেছে। সকালে হাতির পালের সামনে পড়ে পালাতে গিয়ে নারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, খবর পেয়ে বনকর্মী ও এলিফেন্ট রেসকিউ টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। অসচেতন ও উৎসুক জনতার ভিড় বেশি হওয়ায় ও নানাভাবে শব্দ করায় হাতিগুলো উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। হাতিগুলোকে লোকালয় থেকে পাহাড়ে ফেরাতে প্রচেষ্টা চলছে। উপজেলা প্রশাসন, র্যাব ও বিজিবি বনবিভাগকে সহযোগিতা দিচ্ছে।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জিকেএস