৩ সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ

মেয়ের খোঁজে আজও নদীর পাড়ে বসে থাকেন বাবা

বিধান মজুমদার
বিধান মজুমদার বিধান মজুমদার , জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় তিন শিশুসন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনার একমাস হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি মা সালমা বেগমের। এখনো সালমা বেগমের খোঁজ করছে তার পরিবার। শেষবারের মতো হলেও সন্তানের মুখটা দেখতে চান সালমা বেগমের বাবা-মা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে ভোজেশ্বর ইউনিয়নের পাঁচক এলাকার লোকমান ছৈয়ালের মেয়ে সালমা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার শাজাহান মাদবরের ছেলে আজবাহার মাদবরের। বিয়ের পর থেকেই সালমা বেগমের শাশুড়ি মিলি বেগম ও ননদ কলির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। এনিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল।

এসব বিষয় নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হলে অভিমানে গত ৫ নভেম্বর সকালে নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে তিন সন্তান সাহাবীর, আনিকা ও সলেমানকে নিয়ে ঝাঁপ দেন সালমা। ডায়াপার পরা থাকায় নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় আনিকা ও সলেমানকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরদিন ঘটনাস্থলের অদূর থেকে বড় সন্তান সাহাবীরের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে এখন পর্যন্ত সালমা বেগমের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

সালমা বেগমের বাবা লোকমান ছৈয়াল বলেন, ‘আমি এখনো প্রতিদিন আমার মাইয়ার খোঁজ করতে নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়াই। জানি না আমার মাইয়ারে আর খুঁজে পাবো কি না। জীবিত হোক বা মৃত, শেষবারের মতো হলেও মাইয়াডার মুখ দেখতে চাই।’

সালমা বেগমের ভাই কাইয়ুম ছৈয়াল বলেন, ‘আপায় নিখোঁজ হওয়ার পর থিকা দুলাভাই আপার আর কোনো খোঁজ করে নাই। বেঁচে যাওয়া ছোট ছোট ভাইগ্না ভাগ্নিরে তাগো বাড়িতেই নিয়া রাখছে। আমার আম্মায় এখনো আপার জন্য কাঁদে। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি আমার নিখোঁজ বইনের খোঁজ করতে তারা যেন সাহায্য করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই নিখোঁজ সালমা বেগমের খোঁজ করা হচ্ছিল। তিনি যখন নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তখন নদীতে বেশি স্রোত ছিল। আমরা এখনো সালমা বেগমের খোঁজ করছি।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।