মাঝনদীতে আক্ষেপ নিয়ে দাঁড়িয়ে দুই কোটির সেতু

এম এ মালেক
এম এ মালেক এম এ মালেক , জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই গ্রামে ২ বছর আগে ২ কোটি ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয়ে ৫২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে এতো টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এখন এলাকাবাসীর কাছে আক্ষেপে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, নদীর প্রস্থের তুলনায় সেতুর দৈর্ঘ্য অনেকটাই কম করা হয়েছে। এক বছরের প্রকল্প পাঁচ বছরে করলেও সেটা কোনো কাজেই আসছে না। সেতুর দুই পাশের মাটি ভরাট নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। সেতুটির দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় এলাকাবাসী এর এক ভাগ সুবিধাও ভোগ করতে পারছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঘুটিয়া ও উমারপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের নাগরপুর, টাঙ্গাইল, ঢাকা ও মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত সুবিধার জন্য ‘বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের’ আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র‍্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সেতু নির্মাণের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালে কাজটি শুরু হলেও শেষ হয় ২০২১ সালে। যদিও ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সেতুটি নির্মাণ হলেও দুইপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষের চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা সেতুটির দুই পাশে দ্রুত মাটি ভরাট করে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন।

jagonews24

এদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগ বলছে ওই সেতুর পূর্ব পাশে আরও একটি ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হবে। যার দরপত্র এরইমধ্যে আহ্বান করা হয়েছে। পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ হলেই এ কাজ শুরু হবে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন- নির্মাণকাজ শেষ হওয়া সেতুটি যদি নকশায় ৫২ মিটারের পরিবর্তে আরও ২০ থেকে ৩০ মিটার বাড়িয়ে করা হতো তাহলে নতুন করে আর সেতু নির্মাণ করতে হতো না।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী স্থানীয় সরকার বিভাগকে দায়ী করে জাগো নিউজকে বলেন, প্রথমেই উচিত ছিল ৭০ বা ৮০ মিটার সেতু নির্মাণ করা। সেটা না করে এলজিইডি ৫২ মিটার সেতু ৫ বছরে নির্মাণ করেছে। তাও সেটাতে এখনও কেউ উঠতেই পারলাম না। আবার নাকি ৩০ মিটার সেতু বানাবে পূর্ব পাশে। এটা নির্মাণ করতে না জানি আবার কয় বছর লাগে।

jagonews24

বাঘুটিয়া ইউনিয়নের কৃষক ইসাহাক আলী জাগো নিউজকে বলেন, সেতুটি চলাচল উপযোগী হলে আমাদের উৎপাদিত ফসল বড় হাটবাজারে নিয়ে সঠিক দামে বিক্রি করতে পারতাম।

এ প্রসঙ্গে চৌহালী উপজেলা প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নদীর প্রস্থের তুলনায় সেতুর দৈর্ঘ্য কম হয়েছে। এজন্য সেতুটির পূর্ব পাশে আরও ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। এরইমধ্যে সেটার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ সেতুটি নির্মাণ হলে স্থানীয়দের দুর্ভোগ দূর হবে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।