৩৪ ঘণ্টা পর দাফন
সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন একমাত্র ছেলে, মরদেহ আটকে রাখলেন ৫ মেয়ে
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের ঘোষাল গ্রামের বাসিন্দা সাকাত গাজী (৭০)। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৯ নভেম্বর) ভোরের দিকে তিনি মারা যান। এরআগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে সম্পত্তি সব নিজের নামে লিখে নেন একমাত্র ছেলে মামুন গাজী। বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহ দাফনে বাধা দেন পাঁচ মেয়ে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ৩৪ ঘণ্টা পর মরদেহ দাফন করা হয়। এসময় বাড়ির উঠানেই পড়ে ছিল সাকাত গাজীর মরদেহ।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়। ঘটনা পর থেকে মামুন গাজী পরিবার নিয়ে পলাতক।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাকাত গাজী কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ছেলে মামুন গাজী তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে থাকাকালে মামুন বাবার সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন।
বুধবার ভোর ৪টার দিকে মারা যান সাকাত গাজী। তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে গা ঢাকা দেন মামুন। সকাল ৮টার দিকে মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে আসে। কিন্তু সেই মরদেহ দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়ান তার পাঁচ মেয়ে।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, সাকাত গাজীর মেয়েরা তার মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছেন না খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে মেয়েদের আশ্বস্ত করে দুপুরের দিকে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
ওসি বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন তার বাবার আঙুলের ছাপ নিয়ে সম্পত্তি লিখে নেন। যার প্রমাণ মিলেছে সাকাত গাজীর আঙুল থেকে।
সাকাত গাজীর এক মেয়ে লাবনী আক্তার জানান, তার ভাই বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তাদের না জানিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। এ কারণে সম্পত্তির ন্যায্য ভাগের ফয়সালা পেতে তারা মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছেন।
স্থানীয় ঘোষাল জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন জানান, সাকাত গাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে বুধবার বাদ জোহর জানাজার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পাঁচ মেয়ে এসে জানাজা ও মরদেহ দাফনে বাধা দেন। পরে এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নেন সাকাত গাজীর জানাজা তারা পড়বেন না।
আলমগীর হান্নান/এসআর/জেআইএম