লালমনিরহাটে ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

শীত এলেই শহর-গ্রামে বসে বাহারি সব পিঠার হাট। সবচেয়ে বেশি পরিচিত ভাপা, চিতই পিঠা বিক্রি শুরু হয় শীত শুরু আগ থেকেই। এরই মধ্যে লালমনিরহাটের শহর, গ্রামগঞ্জে ধুম পড়েছে ভাপা পিঠা বিক্রির। বিকেল থেকে বিক্রি শুরু হলেও বাজার জমে উঠে সন্ধ্যার দিকে। সঙ্গে থাকে সরিষা বাটা, ধনিয়াপাতা, শুটকির ভর্তাসহ আরও হরেক রকম ভর্তা। প্রতি পিস ধোঁয়া উঠা এসব পিঠা পাওয়া যায় মাত্র ১০ টাকায়।

লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় মহাসড়কের পাশে কিংবা ছোট-বড় অসংখ্য বাজারগুলোতে ভাপা আর চিতই পিঠার দোকান দিয়ে বসেছেন অনেকেই। এদিকে নতুন ধানের পিঠা খেতে দোকানের চারদিকে অপেক্ষায় রয়েছে নানা বয়সী মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখে গেছে, লালমনিরহাটে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কের পাশেই কবরস্থান বাজারের বসেছে ভাপা পিঠার দোকান। এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার সুখানদিঘী ও হাতীবান্ধা উপজেলায় বড়খাতা বিডিআর বাজারে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভাপা পিঠার দোকান বসিয়ে বিক্রি করছেন। আগাম ধানের ভাপা পিঠা খেতে দোকানের চারদিকে ঘিরে আছে ক্রেতারা। নতুন ধানের পিঠার সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা।

Lalmonirhat.jpg

আরও পড়ুন: ২ টাকায় শীতের পিঠা, যত খুশি তত খাও

নতুন ধানের তৈরি করা চালের গুড়া, গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা। প্রতিটি পিঠা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। দাঁড়িয়ে খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। ভাপা পিঠার পাশাপাশি অনেক জায়গায় বিক্রি হচ্ছে চিতই পিঠাও।

ভাপা পিঠা বিক্রেতার রশিদুল ইসলাম (৪০) বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ভাপা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছি। মানুষ প্রচুর খাচ্ছে। প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার পিঠা বিক্রি করছি। শীত বাড়লে প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮০০ টাকার পিঠা বিক্রি হবে। সেই অপেক্ষায় আছি।

এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার সুকান দিঘি এলাকায় ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন আনিসুর রহমান। শীত আসলেই আনিসুর রহমান বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করেন। অন্য সময় তিনি ভ্যানচালক।

ভাপা পিঠা বিক্রেতা আনিসুর রহমান বলেন, শীত আসলে আর ভ্যান চালাই না। এই শীতের সুকানদিঘী এলাকায় ভাপা পিঠা চিতই পিঠা বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় হয়। সে টাকায় সংসার চালে।

আরও পড়ুন: শীতের পিঠা বিক্রি করে দৈনিক আয় ২০০০-৩৫০০ টাকা

হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা বিডিআর বাজার এলাকায় ভাপা পিঠা ভাপা বিক্রেতা ফিরোজা বেগম বলেন, আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই। এক মেয়ে আছে তাকেও বিয়ে দিয়েছি। এখন স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই সংসার চালাতে নিজেই কাজ করছি। প্রতিদিন পাঁচ কেজি চালের আটা দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করছি। এতে প্রতিদিন দুই থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই দুইজনের সংসার চলে।

Lalmonirhat.jpg

পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মুখলেসুর রহমান বলেন, বর্তমানে নতুন ধান দিয়ে গ্রাম-গঞ্জে শুরু হচ্ছে পিঠেপুলি খাওয়ার ধুম। বাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি হচ্ছে।

পিঠে খেতে আসা রফিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, নতুন ধানের ভাপা পিঠা খেয়ে অনেক ভালো লাগছে। ধানের পিঠার আগাম স্বাদ পেলাম।

কবরস্থান বাজারের ব্যবসায়ী মকবুল বলেন, আমি প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এসব দোকান থেকে পিঠা খাই। আগে যদিও বাড়িতে এসব পিঠা বানানোর হিড়িক পড়তো এখন তা আর দেখা যায় না।

আরও পড়ুন: জাবিতে শীতের পিঠা খাওয়ার ধুম

কালিগঞ্জ উপজেলার সুকানদিঘি বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল বাড়ি বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় সুকান দিঘি বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করেন আনিসুর রহমান। এই পিঠা খেতে অনেকেই তার দোকানে ভিড় করে।

রবিউল হাসান/জেএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।