বেড়া দিয়ে তিন পরিবারকে অবরুদ্ধ করলেন যুব মহিলালীগ নেত্রী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

জমি লিখে না দেওয়ায় বাড়ির চারপাশ বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে তিনটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুব মহিলালীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে। এতে চারদিন ধরে বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না তিন পরিবারের ১৫ সদস্য। মাদারীপুরের শিবচরের এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে বইছে সমলোচনার ঝড়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একপাশে বাঁশের বেড়া, অন্যপাশে পাটখড়ি আর টিনের বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে চলাচলের রাস্তা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে তিনটি পরিবার।

ভুক্তভোগীরা জানান, মাদারীপুরের শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের মির্জারচর গ্রামের আব্দুর রহমান মাতুব্বরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে প্রতিবেশী ফিরোজা আক্তার গংদের। কিছুদিন আগে এ নিয়ে আদালতে মামলাও করেন আব্দুর রহমান। সম্প্রতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিস্তারিত লিপিবদ্ধ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার সকালে আব্দুর রহমান মাতুব্বর ও তার চাচা আব্দুল সত্তার মাতুব্বর এবং চাচাতো বোন ফরিদা আক্তারের ঘরের চারপাশে বেড়া দিয়ে আটকে দেন বাঁশকান্দি ইউনিয়ন যুব মহিলালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজা আক্তার। বেড়া দেওয়ায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীও।

jagonews24

জানা যায়, ফিরোজা আক্তার ও আব্দুর রহমান মাতুব্বরের মধ্যে বিরোধপূর্ণ জমির পরিমাণ ১২ শতাংশ। যা পৈত্রিক সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে আছে আব্দুর রহমান মাতুব্বরের। এনিয়ে এলাকা ও থানায় বেশ কয়েকবার সালিশও হয়। তবে স্থায়ী সমাধান মিলছে না।

আব্দুর রহমান মাতুব্বর বলেন, ফিরোজা বারবার লোকজন দিয়ে চাপ দিচ্ছে আমার বাড়ির জায়গা তাকে লিখে দিতে। জমি লিখে না দেওয়ায় আমার বাড়ির চারপাশে বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছে। চলাচলের রাস্তা এখন বন্ধ। আমরা পানির অভাবে কষ্ট করছি, বাথরুমেও যেতে পারছি না। সরকারের কাছে এর একটা স্থায়ী সমাধান চাই।

অভিযুক্ত ফিরোজা আক্তারের দাবি, পৈত্রিক জমি বেদখল থাকায় বেড়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন তিনি। ফিরোজা বলেন, আমাদের জমিতে আমি লোকজন নিয়ে বেড়া দিয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান, থানার ওসি মীমাংসা করে দিলেও তারা মানে না। তাই বাধ্য হয়ে জমিতে বেড়া দিয়েছি।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে মুক্ত করতে পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশকে বলা হয়েছে।

এদিকে বিষয়টিকে অমানবিক উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. মারুফুর রশিদ খান জানান, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। পরিবার তিনটিকে মুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।