অর্থাভাবে আটকে আছে ক্যানসার আক্রান্ত শাওনের চিকিৎসা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১০:৩২ এএম, ২২ নভেম্বর ২০২৩

অডিও শুনুন

ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে বেড়ে উঠেছেন বড় দুই বোনের কাছে। অভাবের সংসারে লেখাপড়া করা তার জন্য অনেকটাই বিলাসিতা। তবে সব বাধা-বিপত্তিকে হারিয়ে নিজের উপার্জনের টাকায় চালিয়ে গেছেন লেখাপড়া। এরই মধ্যে জীবনে নেমে আসে ক্যানসার নামক ব্যাধি। সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অর্থের অভাবে আটকে আছে চিকিৎসা। ক্যানসারকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে বাঁচতে চান সোহানুর রহমান শাওন।

জানা যায়, সোহানুর রহমান শাওন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর এলাকার মৃত মোস্তফা কামালের ছেলে। ঢাকার হাবিবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজের সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষে পড়ছেন তিনি। ফার্মেসিতে চাকরি করে পড়াশোনার খরচ যোগাতেন অদম্য এ তরুণ। কিন্তু গত জুনে তার হসকিন্স লিম্ফোমা ক্যানসার ধরা পরে। এরপরই অসুস্থতার কারণে তার চাকরি চলে যায়। একই সঙ্গে স্নাতক শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। বর্তমানে হুইল চেয়ারেই বন্দী জীবন কাটছে তার।

আরও পড়ুন: টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ দুর্ঘটনায় আহত ফুলালের

শাওন বলেন, মাত্র ৫ বছর বয়সে মা-বাবাকে হারিয়েছি। এরপর বড় বোনের কাছে লালিত পালিত হই। ছয় মাস ধরে আমার হাত-পা অকেজো হয়ে রয়েছে। এর আগে আমার ঘাড়ে একটা বড় অপারেশন হয় ও তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর আমার হসকিন্স লিম্ফোমা ক্যানসার ধরা পড়ে। সর্বশেষ আমি আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলাম।

ওখানকার চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, সুস্থ হতে হলে কেমোথেরাপি ও বোনমেরু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অপারেশন করা লাগবে। যার খরচ অনেক ব্যয়বহুল। সব মিলিয়ে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এরই মধ্যে আমার পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আমি আমার পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করতে চাই কিন্তু জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তাও সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমি বাঁচতে চাই। ডাক্তার বলেছিল চিকিৎসা করালে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে পারি। আমি আর এই জীবন সহ্য করতে পারছি না। আমি এখন আমার পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে গেছি।

শাওনের বড় বোন সুমা আক্তার বলেন, মা-বাবা মারা যাওয়ার পর শাওনকে আমি বড় করেছি। সবসময় চেষ্টা করেছি মা-বাবার দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু হঠাৎ শাওনের ক্যান্সার ধরা পড়ায় ওর চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। ওর উন্নত চিকিৎসার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা যোগাড় করা অসম্ভব। তাই আমি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

আরও পড়ুন: কবজি ছাড়া এক হাতে চলছে সাকিলের জীবন

পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, তার কথা আমি শুনেছি। আমার সাধ্যমতো আমি তাকে সহযোগিতা করবো।

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জানান, আমার পক্ষ থেকে আমি তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।

রাশেদুল ইসলাম রাজু/জেএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।