দুর্নীতির দায়ে মদনে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
দুস্থদের চাল আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি শাখা-১ তাকে সাময়িক বরখাস্থ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
জানা গেছে, ২০০৩ থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া। সেই সময়েও তার বিরুদ্ধে অগনিত অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। ২০০৮ সালে দুস্থদের ২ হাজার কেজি চাল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে জেলও খেটেছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হন। কিন্তু ৫ মাস পর নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন তিনি।
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠনে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকল ধরনের সেবার জন্য ফি নির্ধারণ করেছিলেন তিনি। সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন ভাতা দেওয়ায় প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে ইউপি সদস্য হাদিস মিয়া, এলাই মিয়া ও সেলিম মিয়াসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী ২০২৩ সালের জুন মাসে লিখিত অভিযোগ দেন।
গত ঈদুল ফিতরে দুস্থদের বরাদ্দের চাল চেয়ারম্যান মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে মাস্টার রোলে ভুয়া টিপসই দিয়ে লুটপাট করেন। পরে ৮৭ জন দুস্থর চাল আত্মসাত করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন ইউএনও। এছাড়াও ভুক্তভোগী ও ইউপি সদস্যদের দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক। কয়েক দফা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে ৭ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি শাখা-১।
এইচ এম কামাল/এফএ/এমএস