৫ কিলোমিটার নড়বড়ে রেলপথে ট্রেন চলে ঝুঁকি নিয়ে

রুবেলুর রহমান
রুবেলুর রহমান রুবেলুর রহমান , জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০৪:২৮ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০২৩

রাজবাড়ীতে ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত গোয়ালন্দ বাজার টু গোয়ালন্দ ঘাট (দৌলতদিয়া) পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রেললাইন ও স্টেশন এখন অনেকটাই মৃত। নেই আগের মতো ট্রেনের জৌলুস। যাত্রী ওঠা-নামার জন্য ট্রেন থামলেও বন্ধ হয়ে গেছে গোয়ালন্দ বাজার স্টেশনের কার্যক্রম। রেলপথ নড়বড়ে। লাইনে নেই পাথর বা খোয়া। কাঠের স্লিপারগুলোও ভাঙাচোরা অবস্থা। দেখলে মনে হয় দীর্ঘ দিনের পরিত্যক্ত কোনো রেললাইন।

শুধুমাত্র মাটির ওপর নড়বড়ে নষ্ট কাঠের স্লিপারের ওপর বসানো আছে রেল। এরওপর দিয়েই এখন প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সকাল-বিকেল দুটি ট্রেন হেলে দুলে তিন বার চলাচল করছে। ট্রেন যাওয়ার সময় রেল ও স্লিপারগুলো উঁচু-নিচু হয়।

এদিকে গত দুমাসে খুলনাগামী নকশিকাঁথা মেইল ট্রেন ২৮ আগস্ট দৌলতদিয়ার ফকিরপাড়া ও ১৪ অক্টোবর গোয়ালন্দ পৌরসভার শ্মশানঘাট এলাকায় দুবার লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে কোনো হতাহত ঘটেনি। বর্তমানে মাঝে মধ্যে রেললাইনের স্লিপার পরিবর্তন করলেও সেগুলো অন্যস্থানের পরিবর্তন করা কিংবা বাতিল স্লিপার।

৫ কিলোমিটার নড়বড়ে রেলপথে ট্রেন চলে ঝুঁকি নিয়ে

স্থানীয় রাজিব, সফিকুল শামীম, শাহিদুল শেখসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এক সময় গোয়ালন্দ থেকে ট্রেনে ভারত যাওয়া যেত। সেই গোয়ালন্দ বাজার টু ঘাট স্টেশন দুটি ঐহিত্যবাহী স্টেশন হওয়ার শর্তেও নাই কোনো উন্নয়ন। কয়েক বছর ধরে গোয়ালন্দ বাজার স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ, কমেছে এ রুটে ট্রেনের সংখ্যাও।

সারাদেশে রেলেরও উন্নয়ন হলেও ৫ কিলোমিটার রেললাইনের অবস্থা খুবই নাজুক। কোনোরকম নষ্ট-পচা কাঠের স্লিপারের ওপর বসানো আছে রেল। যার কারণে দেড় মাসে দুবার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া লাইনে কোনো খোয়াও দেওয়া নাই। ট্রেন যাওয়া-আসা করার সময় খুব ধীরে ধীরে চলে। এর চাইতে হেঁটেও আগে যাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে স্লিপার পরিবর্তন করলেও তা পুরাতন বা অন্য স্থানের ব্যবহৃত স্লিপার। দেশের অন্য স্থানের মতো রেলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় রেললাইন ও স্টেশনের উন্নয়ন এবং ট্রেন বাড়ানোর দাবি তোলেন তারা।

৫ কিলোমিটার নড়বড়ে রেলপথে ট্রেন চলে ঝুঁকি নিয়ে

শিশু রিফাত মোল্লা জানায়, রেললাইনে কোনো পাথর বা খোয়া নাই। এ পথে ট্রেন চলার সময় এদিক ওদিক দোলে এবং ট্রেন খু্ব ধীরে ধীরে চলে। সে সময় আমরা ট্রেনে উঠি আবার নামি।

৫ কিলোমিটার নড়বড়ে রেলপথে ট্রেন চলে ঝুঁকি নিয়ে

দৌলতদিয়া ঘাট স্টেশনের ব্যবসায়ী মো. আশরাফ বলেন, আগে পাঁচ-ছয়টি ট্রেন দৌলতদিয়া ঘাটে এলেও এখন মাত্র দুটি ট্রেন চলাচল করে। পদ্মা সেতু হয়ে ঘাট অনেকটাই মরে গেছে। এখন ট্রেন না চলছে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে। তাই মেইল ট্রেনটি না উঠিয়ে এবং একটি আন্তঃনগর দিলে সবাই উপকৃত হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি প্রকৌশল বিভাগ জানে। মূলত ভৌগলিক কারণে অন্য স্থানের মতো গোয়ালন্দ বাজার টু গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত রেলের ব্যাজমেন্ট গঠন করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর অতি বর্ষণ ও বন্যার কারণে ওই স্থানের কাঠের স্লিপারগুলো নষ্ট হচ্ছে। এরপরও তাৎক্ষণিক যে স্লিপারগুলো পরিবর্তন সম্ভব, সেগুলো তারা পরিবর্তন করে।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।