বাড়ছে চালের দাম, কমছে বেচাকেনা

মোবাশ্বির শ্রাবণ মোবাশ্বির শ্রাবণ , জেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

অডিও শুনুন

নারায়ণগঞ্জে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে, যা কেজিপ্রতি দাঁড়ায় দুই থেকে তিন টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুমের শেষ সময় হওয়ার কারণে ধানের সংকট রয়েছে। ধানের দাম বাড়তে শুরু করেছে। যে কারণে ধীরে ধীরে চালের দামও বাড়তে শুরু করছে। নতুন ধান আসলে হয়তো চালের দাম আবার কমে যাবে।

নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রধান পাইকারি বাজার হচ্ছে নিতাইগঞ্জ। এখানকার চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জনা যায়, মোকাম থেকে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। যারা খুচরা বিক্রেতা তাদের আসলে এখানে কিছু করার থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন মোকামের লোকজন। তারা যেভাবে বিক্রি করে থাকেন এখানকার ব্যবসায়ীদেরও সেভাবেই বিক্রি করতে হয়।

jagonews24

আরও পড়ুন: নওগাঁয় খুচরা বাজারে বেড়েছে চালের দাম

চাল ব্যবসায়ী আনিসুল হক বলেন, লতা চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। মিনিকেট চালের দাম আগের মতোই আছে। নাজিরশাইল চালের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। আমরা যতটুকু জানি, সিজনের শেষ পর্যায় হওয়ার কারণে ধানের সংকট রয়েছে। আবার নতুন ধান বাজারে আসলে দাম কমবে।

তিনি আরও বলেন, চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বেচাকেনাও অনেকটা কমেছে। কমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের পাইকারি ও খুচরা বাজারে নিয়মিত মনিটরিং হয়। কিন্তু মোকামওয়ালাদের কোনো মনিটরিং নেই। তাদের ওখানে মনিটরিং থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকতো।

মেসার্স হক ট্রেডার্সের মালিক আক্তারুজ্জামান রতন মাদবর বলেন, গত আটদিনের ব্যবধানে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। লতা আর স্বর্ণা চালের দামটাই বেশি বেড়েছে। মিনিকেট চাল তেমন বাড়েনি। কেজিপ্রতি দুই থেকে থেকে আড়াই টাকা বেড়েছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের বেচাকেনা কমে গেছে। মোকামের লোকজন এই দামটা বাড়িয়ে দিয়েছে। তারাই সবকিছু করে।

আরও পড়ুন: আরও বেড়েছে চালের দাম

আরেক চাল ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, মোটা চালটা প্রতি বস্তায় ১৫০ টাকা করে বাড়ছে। মিনিকেট ১০০ টাকা বাড়ছে। নাজিরশাইল আগের দামেই আছে। লতা ও আটাইশ প্রতিবস্তা ২ হাজার ৩২০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪২০ টাকা ছিল। যেটা ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪৫০ টাকা হয়েছে। যাদের কাছ থেকে চাল আনা হয় তারা বলছে ধানের দাম বেশি।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে চালগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসে। তবে আমাদের বেচাকেনা আগের থেকে কমে গেছে। ব্যবসার পরিস্থিতি খুব খারাপ যাচ্ছে।

নিতাইগঞ্জ পাইকারি খুচরা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এই ব্যবসাটা হচ্ছে মুক্ত বাজার। এখানে কোনো কিছুর মূল্যই স্থায়ী নয় যে সবসময় এক দাম থাকবে। দাম ওঠানামা করবেই। উৎপাদনের সঙ্গে দামের কম-বেশি হয়ে থাকে। মানুষের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। সে হিসাবে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়লে অস্বাভাবিক কিছু না। এটা ব্যবসায়ীদের লাভ-লসের ব্যাপার। জোয়ার-ভাটার মতো। আমার জানামতে চালের দাম তেমন বাড়েনি।

আরও পড়ুন: দেশে চাল উৎপাদন-মজুতে রেকর্ড, দামে নাভিশ্বাস ক্রেতার

নিতাইগঞ্জ চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নূরুদ্দীন জাগো নিউজকে বলেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে চালের বাজারে প্রভাব পড়েছে। মিলওয়ালারা চালের দাম বাড়িয়েছে। সারাদেশেই ধানের দাম বেশি, বেচাকেনা নেই। আমাদের বেচাকেনা একেবারেই কমে গেছে। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারাদেশেই বেচাকেনা কমে গেছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, চালের দাম তো বাড়ার কথা না। আমি বিষয়টি নিয়ে বাজার কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবো। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার বিষয়টি আমরা দেখবো।

এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।