ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা
ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে বাগরুদ্ধ জোনায়েদ
ভালোবেসে মোছা. হোসনা আক্তার তুলিকে বিয়ে করেছিলেন জোনায়েদ হোসেন। ছয় বছরের সংসার জীবনে তাদের চার বছরের এক ছেলে সন্তানও আছে। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ভালোবাসর মানুষটিকে হারিয়ে বাগরুদ্ধ জোনায়েদ।
জানা গেছে, করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের সাকুয়া এলাকার মো. আরজু মিয়ার ছেলে মো. জোনায়েদ হোসেন। প্রেম করে ২০১৭ সালে তুলিকে বিয়ে করেন তিনি। ফাহিম নামে তাদের ছেলে আছে।
জোনায়েদ ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে মার্কেটিংয়ে চাকরি করতেন। পরিবার নিয়ে থাকতেন মিরপুর-১২ নম্বরের একটি ভাড়া বাসায়। ১ অক্টোবর জোনায়েদের স্ত্রী তুলি ও তার ছেলে ফাহিম গ্রামের বাড়ি যান। তাদের ঢাকায় নিতে শনিবার বাড়িতে আসেন জোনায়েদ। সোমবার স্ত্রী সন্তান ও শ্যালকসহ চারজন কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে এগারসিন্ধুর গোধূলিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তারা।
ভৈরব রেলস্টেশনের জগন্নাথপুর ক্রসিং এলাকায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার নিমিষেই চোখের সামনে প্রাণ যায় জোনায়েদের স্ত্রী তুলির। তাকে হারিয়ে বাগরুদ্ধ জোনায়েদ।
ট্রেনে থাকা তুলির ছোট ভাই আমলগীর বলেন, ভৈরব স্টেশন থেকে ৮০০ ফিট যেতেই একটা বিকট শব্দ হলে আমার বোন চিৎকার করে বলে আমাকে ধর। তারপর দেখি জানালার বাইরে মাথা থাকায় সম্পূর্ণ থেঁতলে যায়। বোনের মরদেহ সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়ি আনি। তাকে হারিয়ে আমার দুলাভাই বাগরুদ্ধ হয়ে গেছেন।
আলমগীর আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে তুলির জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তুলির মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
সোমবার বিকেলে ভৈরবের জগন্নাথপুর এলাকার কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এগারসিন্ধুর গোধূলি ট্রেনের পেছনের দুটি বগিকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৫ জন যাত্রী। মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এসকে রাসেল/এসজে/এএসএম