ফরিদপুরে এক মণ্ডপে তিন শতাধিক প্রতিমা, লাখো মানুষের ভিড়
ব্যতিক্রমী আয়োজনে ফরিদপুরের সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা-চাঁদপুর গ্রামের যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়ির মণ্ডপে চলছে দুর্গোৎসব। তিন শতাধিক প্রতিমা নিয়ে তৈরি এ মণ্ডপ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন লাখো মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরে এ বছর ৮৩৪টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। গত বছর জেলায় পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৮২৯টি। এক বছরের ব্যবধানে মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়িতে বৃহৎ পরিসরে তিন শতাধিক প্রতিমা নিয়ে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব প্রতিমার মাধ্যমে পৌরাণিক নানা কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পূজাকে কেন্দ্র করে আলোকসজ্জা ও বিভিন্ন ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। তিন শতাধিক প্রতিমা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন লাখো দর্শনার্থী। আশপাশের জেলা থেকেও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন নিয়ে ভক্তরা গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে পূজা দেখছেন।
প্রতিমাশিল্পী সুজয় কুমার পাল জাগো নিউজকে বলেন, আড়াই মাস ধরে কাজ করে রামায়ণ ও মহাভারতের মূল কাহিনি ফুটিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আছে হরিশ্চন্দ্র, রাম-লক্ষণ, মুচি রুহি দাশের কাহিনি। এতে সব মিলিয়ে তিন শতাধিক প্রতিমা আছে। এটি দেশের কয়েকটি পূজার মধ্যে অন্যতম একটি সেরা পূজা। দূর-দূরান্ত থেকে সর্বস্তরের জনগোষ্ঠী এ মন্দিরে ভিড় করেন।
সালথা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে পূজা দেখতে আসা বিধান কুমার জাগো নিউজকে বলেন, এখানে আসার পর আলো ঝলমল পরিবেশে পূজা আয়োজন দেখে খুবই ভালো লেগেছে। গতবার নাম শুনেও আসা হয়নি। এবার এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না আয়োজনটা কত বড়।
মধুখালীর বামুনদী গ্রাম থেকে পূজা দেখতে আগত উত্তম রায় জাগো নিউজকে বলেন, এখানে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পূজা দেখে বিমোহিত হয়েছি। খুবই ভালো লেগেছে। পরিবারের সবাই খুশি। প্রতিমা, আলোকসজ্জা, প্রসাদ বিতরণ সব মিলিয়ে খুবই ভালো আয়োজন। আইনশৃঙ্খলাও ভালো।
এ বিষয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিধান সাহা বলেন, সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম ফরিদপুরের দুর্গাপূজা। বিশেষ করে ধোপাডাঙ্গা-চাঁদপুরে ও আলফাডাঙ্গা হরি মন্দিরে পূজা দেখতে লাখো মানুষের ভিড় জমেছে।
ফরিদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথ জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এভাবে পূজা আয়োজন চলছে। এ বছর মণ্ডপে তিন শতাধিক প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বড় পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সামনে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের সুসজ্জিত একটি তোরণ। বিশাল আয়োজনে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান জাগো নিউজকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে সব প্রস্তুতি আছে। এবার অধিকাংশ মন্দির ও মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে সার্বক্ষণিক পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি মণ্ডপ ঘিরে গঠন করা হয়েছে সম্প্রীতি কমিটি।
এন কে বি নয়ন/এসজে/এএসএম