বগুড়ায় দায়িত্বরত কারারক্ষীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা
নিখোঁজের ১২ ঘণ্টা পর বগুড়া জেলা কারাগারের একটি কালভার্টের নিচ থেকে এক কারারক্ষীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতের নাম একরামুল হক (৪৫)। তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কারাগারের ২ নম্বর ফটকের নদর্মা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসময় তার দেহে কারারক্ষীর পোশাক ছিল।
কারা সূত্র জানায়, বুধবার (১৮ অক্টোবর) দিনগত রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত একরামুল বগুড়া জেলা কারাগারের ২ নম্বর ফটকের দায়িত্বে ছিলেন। এরপরে রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত আরেক কারারক্ষী মামুন হোসেনের সেখানে দায়িত্বে থাকার কথা। তবে মামুনের দাবি, অসুস্থতার জন্য তিনি ওই গেটে দায়িত্ব পালন করতে যাননি। আজ দুপুর ১২টার দিকে মামুনকে আবারও ওই গেটে দায়িত্ব পালনের জন্য পাঠানো হয়। এরমধ্যে ডিউটি অফিসার দুপুর ২টার দিকে ব্যারাকে একরামুলকে না পেয়ে বগুড়া কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে জানান।
পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কারারক্ষী মামুন জেলা কারাগারের ২ নম্বর গেটের নদর্মার একটি কালভার্টের নিচে একরামুলের মরদেহ ভেসে থাকার কথা জানান। খবর পেয়ে বগুড়া সদর থানাপুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত একরামুল শ্যালক রবিউল ইসলাম বলেন, একরামুলের কোনো রোগব্যাধি ছিল না। পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২ নম্বর ফটকের দায়িত্বে থাকা মামুন হোসেন বলেন, বুধবার রাতে ফোনে মায়ের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। ডিউটি বন্টনকারী কর্মকর্তাকে জানিয়ে আমি বিশ্রামে যাই। রাতে ফটকে আমি আসিনি। এজন্য কিছু বলতে পারছি না। আজ দুপুরে ওই ফটকে আবার দায়িত্ব পালন করতে গেলে একরামুলের মরদেহ দেখতে পেয়ে অফিসে জানাই।
ফোনে কথা-কাটাকাটির জেরে অসুস্থ হওয়াটা স্বাভাবিক কি না এমন প্রশ্নে কারারক্ষী মামুন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান রুবেল বলেন, সদস্যরা ডিউটি করে সাধারণত ব্যারাকে চলে যান। দুপুরে তার নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারি। এর কিছুক্ষণ পরেই মরদেহ ভেসে ওঠার খবর পাই।
তিনি আরও বলেন, মামুন ফটকের দায়িত্বে আসেননি বিষয়টি রহস্যজনক। ছুটি নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নই। তার দায়িত্বে অনুপস্থিতির বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। মামুনের দাবি ও একরামুলের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, কারারক্ষীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরহতাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এনামুলের মাথায় অল্প আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার মৃত্যুর সবগুলো দিক নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এসআর/জেআইএম