‘প্রতিশোধের বিষে’ মরলো খামারির ১৪০০ হাঁস
বুলবুল ইসলাম ও আরজু মিয়া। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি হাঁসের খামার দেন। সফলতার স্বপ্নও দেখেন তারা। কিন্তু কয়েক ঘণ্টায় তাদের স্বপ্ন ধুলায় মিশে গেছে। কারও দেওয়া বিষে খামারের অসংখ্য হাঁস মারা গেছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে নেত্রকোনার মদন উপজেলার শাহাপুর পূর্বপাড়া গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, শাহাপুর গ্রামের শামছুদ্দিনের ছেলে নূর আহম্মদ (৩০) ও একই গ্রামের মৃত রোজ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম হাঁসের খামারে বিষ মিশ্রিত খাবার দিয়েছেন। সেই খাবার খেয়ে সোমবার সকালে খামারিদের ১ হাজার ৪০০ হাঁস মারা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে পূর্বপাড়া গ্রামের বুলবুল ইসলাম ও আরজু মিয়া বাড়ির সামনে জালের বেড়া দিয়ে ১ হাজার ৪৫০টি হাঁসের বাচ্চা পালন শুরু করেন। ১৫ দিন আগে মাদক ব্যবসায়ী নূর আহম্মদ ও রবিউল হাঁসের খামারের পাশে তাদের মোটরসাইকেল রাখেন। কিছু সময় পড় এসে দেখতে পান মোটরসাইকেলটি পড়ে গেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে খামার মালিক বুলবুল ইসলামের স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়।
এ নিয়ে বুলবুলের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সোমবার ভোরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হাঁসের খামারে দেন নূর আহম্মদ ও রবিউল। সেই বিষ মিশ্রিত খাবার খেয়ে খামারির ১ হাজার ৪০০ হাঁস মারা গেছে। হাঁস মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নূর আহম্মদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
হাঁস খামারি আরজু মিয়া বলেন, হাঁসের খামার নিয়ে স্বপ্ন ছিল অনেক। দুই ভাই মিলে ৩ লাখ টাকায় খামারটি দিয়েছিলাম। এখন আমার সব শেষ। এলাকার মাদক ব্যবসায়ী নূর আহম্মদ ও রবিউল প্রায় সময় খামারের পাশে মোটরসাইকেল রাখে। একদিন মোটরসাইকেলটি পড়ে যায়। এতে তারা আমার ভাতিজাকে মারধর করে। আমরা গাড়ি রাখতে নিষেধ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বিষ মিশ্রিত খাবার দিয়ে আমাদের সব হাঁস মেরে ফেলেছে।
সোমবার সকাল থেকেই অভিযুক্ত নূর আহম্মদ ও রবিউল ইসলাম পলাতক। তবে নূর আহম্মদের বোন সুফিয়া আক্তার বলেন, আমার ভাই চার-পাঁচ দিন ধরে বাড়িতে নাই। আরজু ও বুলবুল মিয়ার হাঁস মরে যাওয়ায় আমার ভাইকে দোষ দিচ্ছে। তারা আমাদের মারধর করতে চাইছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাইরান ইকবাল বলেন, আরজু মিয়া ও বুলবুল ইসলাম আমার অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁসের খামার করেছে। তাদের খামারের ১ হাজার ৪০০ হাঁস মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ল্যাবটেস্ট করার জন্য মারা যাওয়া হাঁসের স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ তাওহীদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (খালিয়াজুরী সার্কেল) নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচ এম কামাল/জেএস/জিকেএস